বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
দেশের ব্যাংকিং খাতে ঋণের সুদ মওকুফেরও হিড়িক
প্রকাশ: ০৯:১৬ am ১৫-০৭-২০১৭ হালনাগাদ: ০৯:২৪ am ১৫-০৭-২০১৭
 
 
 


দেশের ব্যাংকিং খাতে ঋণ অনিয়ম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সুদ মওকুফেরও হিড়িক পড়েছে। গত এক দশকের হিসাবে দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় খাতের ৮ বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক ৯ হাজার ২৮৫ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১০ সালে সুদ মওকুফের হিড়িক শুরু হয়। ওই বছরে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো সুদ মওকুফ করে ২ হাজার ১০৬ কোটি টাকার। পরের বছর ২০১১ সালেও ২ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকার সুদ মওকুফের ঘটনা ঘটে। সে তুলনায় ২০১৬ সালে সুদ মওকুফ অর্ধেকে নেমে আসে। এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, যারা সুদ মওকুফের সুবিধা নিয়েছেন, তাদের বড় অংশই ঋণ নেওয়ার সময় নিয়ম মানেননি। এছাড়া রাজনৈতিক প্রভাব, পরিচালকদের প্রভাব ও ব্যাংকের শীর্ষ পদে থাকা অনেকের প্রভাবেও সুদ মওকুফের ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, এভাবে কিছু মানুষ সুদ মওকুফের সুবিধা পেলে অন্য যারা নিয়মিত ঋণের টাকা পরিশোধ করেন তারাও ঋণের টাকা ফেরত দিতে অনীহা দেখাবেন। বিভিন্নভাবে মওকুফের সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে ব্যাংকগুলোতে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও শক্ত অবস্থান নিতে হবে। ব্যাংকগুলো মূলত ২০০৬ সালে জারিকৃত অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রের পরিপ্রেক্ষিতে সুদ মওকুফ করে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ ব্যাংক সুদ মওকুফে কস্ট অব ফান্ড শিথিল করে ঋণগ্রহীতাকে সুযোগ দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই পরিপত্রে ব্যবসার দুর্দশাজনিত কারণে সুদ মওকুফের বিধান থাকলেও অন্য কারণ দেখিয়েও সুদ মওকুফ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, এক দশকে সোনালী ব্যাংক ২ হাজার ৪৪৬ কোটি, জনতা ব্যাংক ৩ হাজার ৩৩৫ কোটি, অগ্রণী ব্যাংক ১ হাজার ৯৮৪ কোটি, রূপালী ব্যাংক ৭১৫ কোটি, বেসিক ব্যাংক ৬৮ কোটি ৫৬ লাখ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ২৪৩ কোটি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ৩৮৬ কোটি ৪৭ লাখ এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ৯৭ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, ঋণ কেলেঙ্কারিসহ অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। এতে ডিসেম্বর-২০১৭ শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর প্রকৃত লোকসান দাঁড়িয়েছে ৫১১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এর মধ্যেও ব্যাংকগুলোতে সুদ মওকুফের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এতে ব্যাংকগুলোর যেমন আয় কমছে, তেমনি বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায়ও পিছিয়ে পড়ছে। তথ্যে দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানার বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো বিগত ৫ বছরে সুদ মওকুফ করেছে ৩ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১২ সালে মওকুফ করা হয়েছে ৯৯৬ কোটি ৭৫ লাখ, ২০১৩ সালে ৫১৮ কোটি ৬৪ লাখ, ২০১৪ সালে ৫৬২ কোটি ৯৫ লাখ, ২০১৫ সালে ৭৪৩ কোটি ৬০ লাখ এবং ২০১৬ সালে ৪০৮ কোটি ৫ লাখ টাকার সুদ মওকুফ করা হয়েছে।  

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT