কবি ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে পুলিশ। গতকাল পর্যন্ত তিনি অপহূত হয়েছেন এমন তথ্যে নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি অপহূত হয়েছেন এটার সত্যতা না পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কোনো বাধা থাকবে না। এক্ষেত্রে পেনাল কোডের ২১১ ধারায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। পারিবারিক ও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া জবানবন্দির তথ্যই আবার জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছেন ফরহাদ মজহার। শুধু তাই নয়, তিনি বলেছেন, ঘটনার সঠিক তদন্ত করা হোক। এর বাইরে আরও কিছু থাকলে তা যেন তদন্ত করা হয়। তদন্তের তথ্য ও ১৬৪ ধারায় দেওয়া ফরহাদ মজহারের জবানবন্দির তথ্যে গরমিল মেলাতে ফের গতকাল তাকে ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল। একটি সূত্র বলছে, স্ত্রী ফরিদাসহ ফরহাদ মজহার ডিবি কার্যালয়ে আসেন। ফরহাদ মজহারের কাছে অপহরণ সংক্রান্ত তথ্য আবার জানতে চাওয়া হয়। উদ্ধার করা ভিডিও ফুটেজ ও কললিস্ট ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিকাশে এক নারীকে টাকা পাঠানো এবং তার সঙ্গে কথোপকথনের বিষয়টিও জানতে চাওয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন জানান, ফরহাদ মজহারের অপহরণের ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে গ্রেফতার করা গেলে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা যেত। তারা যে অভিযোগ করছেন তা যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয় তাহলে ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নে আবদুল বাতেন জানান, তিনি অসত্য তথ্য দিলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। ফরহাদ মজহার ও তার পরিবার বলছে, ৩ জুলাই শ্যামলীর বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন ফরহাদ মজহার। পরে তিনি স্ত্রীকে মোবাইল ফোনে জানান, কে বা কারা তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাকে মেরেও ফেলা হতে পারে। পরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ১৯ ঘণ্টা পর যশোরের অভয়নগর থেকে তাকে উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়ার পর দিন আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ফরহাদ মজহার বলেন, সরকারকে বিব্রত করতেই আমাকে চোখ বেঁধে অপহরণ করা হয়েছিল। কে বা কারা অপহরণ করেছিল, আমি তাদের চিনি না। ৮ জুলাই এক অনুষ্ঠানে আইজিপি একেএম শহীদুল হক বলেছিলেন, ফরহাদ মজহারের অপহরণের কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত পুলিশ পায়নি। ১৩ জুলাই আরেক অনুষ্ঠানে আইজিপি বলেন, স্বেচ্ছায় ঢাকা ছাড়েন ফরহাদ মজহার। এ ঘটনায় যে মামলা হয়েছে ডিবি তা তদন্ত করে দেখছে।