ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোর মত স্মার্টফোন অ্যাপে ভয়েস কল সুবিধা সরকার বন্ধ করবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
রোববার সচিবালয়ে নিজের দপ্তরে তিনি বলেন, “বন্ধ হতে হবে অবৈধ ভিওআইপি, এক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান হল ‘জিরো টলারেন্স’।”
ইমো, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপের মত ওটিটি অ্যাপ বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত সরকার নেয়নি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এসব অ্যাপ বন্ধ হবে না, হচ্ছে না, হবার প্রশ্নই আসে না।”
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, এই অ্যাপগুলোর ভয়েস কল সুবিধার কারণে আন্তর্জাতিক ফোনকলের ব্যবসায় বাংলাদেশ মার খাচ্ছে।
বিটিআরসির প্রধান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, মোবাইল ফোনে এ ধরনের ‘ওভার দ্য টপ’ অ্যাপ ব্যবহার করে ভয়েস কলের সুবিধা নিয়ে আগামী দুই এক মাসের মধ্যে একটি সিদ্ধান্তে আসতে চান তারা।
ওই সংবাদ সম্মেলনের খবরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ওটিটি অ্যাপ বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে এই আশঙ্কায় অনেকেই বিটিআরসির ভাবনাকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হিসেবে বর্ণনা করেন।
তাদের আশ্বস্ত করে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, অ্যাপে ভয়েস কল সুবিধা বন্ধ হচ্ছে না।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন রেট বাড়ানোর আগে বৈধ পথে গড়ে দিনে ১২ কোটি মিনিট ইনকামিং কল দেশে আসত। ২০১৫ সালের আগস্টে কল টার্মিনেশন রেট দেড় সেন্ট থেকে বাড়িয়ে দুই সেন্ট করার পর এখন তা দৈনিক গড়ে সাত কোটি মিনিটে নেমে এসেছে।
“এটি একটি বিরাট সমস্যা আমাদের সামনে। শুধু যে অবৈধ ভিওআইপি হচ্ছে তা নয়, অনেক কল ওটিটি... যেমন ভাইবার, ইমো বা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে হচ্ছে। তবে এর পরিমাণ আমরা এখন বলতে পারছি না।”
২০১৪ সালে যেখানে বিশ্বে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ২০০ কোটির মত, চলতি বছর শেষে তা ৩৯০ কোটি ছড়িয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে প্রযুক্তি কোম্পানি এরিকসন।
আর স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের ৪৫ শতাংশই ওটিটি অ্যাপ ব্যবহার করেন। তুমুল এই জনপ্রিয়তার কারণে বিশ্বে ‘ওভার দ্য টপ’ব্যবসার আকার ২০২০ সাল নাগাদ ৬২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিপণন গবেষণা প্রতিষ্ঠান মার্কেটস অ্যান্ড মার্কেটস।
দেশে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ‘নিরাপত্তার কারণ’ দেখিয়ে গত বছর জানুয়ারিতে সরকার ভাইবার, ট্যাঙ্গো, হোয়াটস অ্যাপসহ কয়েকটি ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং ও ভিওআইপি অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করেছিল। তবে কয়েকদিন পর সেগুলো খুলে দেওয়া হয়।