শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন চান আবুল হাসানাতের ছোট ভাই ও বড় ছেলে
প্রকাশ: ১০:০০ am ১৯-০৭-২০১৭ হালনাগাদ: ১০:০২ am ১৯-০৭-২০১৭
 
 
 


সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে বরিশালে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন এ নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়েছে। প্রায় বছরখানেক আগে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ পৃথকভাবে বর্ধিত সভা করে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর বড় ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকেই দলীয় প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে সুপারিশ পাঠায়। সম্প্রতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছোট ভাই অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খোকন আবদুল্লাহর নাম যুক্ত হওয়ায় নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। খোকন আবদুল্লাহ দলের হাইকমান্ডের একাধিক ব্যক্তির পছন্দের তালিকায় থাকলেও তিনি বরিশালের আওয়ামী রাজনীতিতে কখনই সক্রিয় না থাকায় এ নিয়ে দলীয় ফোরামে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এমনকি খোকন আবদুল্লাহকে নিয়ে অনেকটা অস্বস্তিতেই রয়েছেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা। অন্যদিকে সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর তালিকায় সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর পাশাপাশি খোকন আবদুল্লাহর নাম যুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে দলীয় কার্যকরী কমিটির বৈঠকও করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ। গত শুক্রবার বিকেলে মহানগর আওয়ামী লীগের বৈঠকে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য মহানগর আওয়ামী লীগের প্রস্তাব ফের কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সূত্রমতে, ২০১৪ সালে শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পর বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উত্থান ঘটে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর বড় ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ও বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর। হিরণের মৃত্যুর পর পুরো বরিশাল নগরী চষে বেড়ান সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। এ কারণেই বরিশাল মহানগর ও সদর উপজেলার আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ অঙ্গ-সংগঠনের প্রায় সব নেতাকর্মীর নেতৃত্বে রয়েছেন সাদিক আবদুল্লাহই। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য হওয়া আর নেতৃত্বগুণের কারণে তৃণমূলের বেশিরভাগ নেতাকর্মী তার সঙ্গেই থাকেন। শুধু বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনই নয়, বরিশাল জেলাসহ দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে সাদিক আবদুল্লাহর প্রভাব রয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, হিরণ যেভাবে নেতাকর্মীদের আপন করে নিতেন ঠিক সেভাবেই সাদিক অভিভাবকের মতো তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ কারণে বরিশালের নেতাকর্মীরা সাদিককেই তাদের দলীয় অভিভাবক হিসেবে মানেন। রাজনৈতিক দূরদর্শিতার কারণে অতি অল্প সময়েই তিনি দলের সব নেতাকর্মীর মন জয় করে নেন। অন্যদিকে সিটি নির্বাচনে প্রার্থীর নামের তালিকায় থাকা খোকন সেরনিয়াবাত এতদিন চট্টগ্রামেই বসবাস করেছেন। তিনি মাঝে মধ্যে বরিশালে এলে তার শ্বশুরের বাসা নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ডের বাসায় ওঠেন। চট্টগ্রাম ছাড়া ঢাকায় ধানমণ্ডির বাসায় বসবাস করেন তিনি। খোকন সেরনিয়াবাত রাজনীতিতে কখনই সক্রিয় ছিলেন না। এমনকি দলে তার কোনো পদ-পদবিও নেই। কিন্তু হঠাত্ করে এমন এক অরাজনৈতিক ব্যক্তি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের হাইকমান্ডের পছন্দের তালিকায় থাকা নিয়ে হতবাক হয়েছেন বরিশালের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বরিশাল পুরো নগরীই এখন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ সাদিককেই মেয়র প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়। এমনকি বরিশাল সদর আসনের সাংসদ হিরণপত্নী জেবুন্নেছা আফরোজও সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মেনে নিয়ে দলীয় ফোরামে বক্তব্য রাখেন। কিন্তু হঠাত্ করে খোকন সেরনিয়াবাতের নাম আলোচনায় আসার পেছনে অন্য রহস্য লুকিয়ে আছে। তিনি আরও বলেন, যার বরিশালে কোনো রাজনৈতিক ভিত্তি নেই তিনি কী করে দলীয় প্রার্থী হবেন তা বোধগম্য নয়। এ বিষয়ে খোকন সেরনিয়াবাত সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিষয়টি অনানুষ্ঠানিকভাবেই শুনেছি। এটি সম্পূর্ণ দল ও নেত্রীর বিষয়। বরিশালের মানুষের চাওয়া-না চাওয়ার বিষয়ও থাকতে পারে। নেত্রী ও বরিশালের মানুষ যদি আমাকে মেয়র হিসেবে দেখতে চান, তখন তো চিন্তা করতেই হবে। এ বিষয়ে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে নেতাকর্মীদের পাশে থেকে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছি। সুখে-দুঃখে নেতাকর্মীদের পাশে আমিই দাঁড়াই। মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা আমাকে মেয়র হিসেবে দেখতে চান। এ কারণেই আমি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হতে আগ্রহী। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে দলীয় মনোনয়নের ওপর। তবে মনোনয়ন বোর্ড ও দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তাই তিনি মেনে নেবেন বলে জানান।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT