শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
বার্লিনে হামলার ‘দায় স্বীকার’ আইএসের
প্রকাশ: ০৯:৪৩ am ২১-১২-২০১৬ হালনাগাদ: ১০:০৮ am ২১-১২-২০১৬
 
 
 


জার্মানির রাজধানী বার্লিনে ক্রিসমাস মার্কেটে ভিড়ের উপর লরি চালিয়ে দিয়ে ১২ জনকে ‘হত্যার’ ঘটনায় মধ‌্যপ্রাচ‌্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস দায় স্বীকার করেছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ‌্যমগুলো জানিয়েছে।

আইএসের মুখপাত্র আমাক-এ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক জোটভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর হামলার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ‘ইসলামিক স্টেটের একজন সৈনিক’ বার্লিনে হামলা চালিয়েছে।

তবে এ ঘটনার সঙ্গে আইএসের সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ‌্য এখনও জার্মান তদন্তকারীরা পাননি জানিয়ে সিএনএনের একজন সন্ত্রাসবাদ বিশ্লেষক বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোতে নিজেদের কথিত সমর্থকদের হামলা বোঝাতে জঙ্গি গোষ্ঠীটি প্রায়ই এ ধরনের কথা বলে। এতে এটা ভেবে নেওয়া উচিত হবে না যে, তারাই হামলার নির্দেশনা দিয়েছে বলে দাবি করছে।

সিরিয়া ও ইরাকের একটি বড় অংশ দখলে নিয়ে খেলাফতের ঘোষণা দেওয়া আইএসকে হটাতে সেখানে রাশিয়া ও সিরীয় বাহিনীর অভিযানের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে মিত্র দেশগুলোর বিমান হামলা চলছে।

আইএসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় এসব দেশের নাগরিকদের ওপর হামলা চালাতে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৮টার দিকে ইস্পাত বহনকারী লরিটি যখন বার্লিনের প্রাণকেন্দ্র ব্রাইটশেইডপ্লাৎজে বড়দিন সামনে রেখে বসা বাজারে ঢুকে পড়ে, কাঠের ছোট ছোট দোকানগুলো তখন পর্যটক আর স্থানীয় ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট। ওই ভিড় মাড়িয়েই লরি নিয়ে ৫০ থেকে ৮০ মিটার এগিয়ে যায় চালক।

এ ঘটনায় ১২ জন নিহতের পাশাপাশি আরও প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হন।

জার্মান পুলিশ এ ঘটনাকে একটি ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বিবেচনা করেই তদন্ত এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছে।

এ ঘটনায় সন্দেভাজন হিসেবে আটক একমাত্র ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জার্মানির সংবাদমাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে ২৩ বছর বয়সী একজন পাকিস্তানি অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যার নাম লেখা হয়েছে ‘নাভেদ বি’। তার বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে নেওয়ার মত পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় তদন্তকারীরা তাকে ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে বিবিসির প্রতিবেদনে।

বার্লিন পুলিশের মুখপাত্র উইনফ্রিড ওয়েনজেল এর আগে বলেছিলেন, ঘটনার পর সন্দেহভাজন ওই যুবক যখন ‘পালিয়ে যাওয়ার জন্য’ দৌঁড়াচ্ছিলেন, তখন ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে একটি পার্ক থেকে তাকে আটক করা হয়।

“একজন প্রত্যক্ষদর্শী তাকে অনুসরণ করেন। তিনিই পুলিশকে খবর দেন এবং পুলিশ দ্রুত ওই ব্যক্তিকে আটক করে।”

কিন্তু ওই পাকিস্তানিকে ছেড়ে দেওয়ার আগে মঙ্গলবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জার্মানির ফেডারেল প্রসিকিউটর পিটার ফ্রাঙ্ক বলেন, “ওই যুবক দোষী নাও হয়ে থাকতে পারেন- এমন একটি ধারণাকে আমাদের আমলে নিতেই হচ্ছে।”

পিটারের মতে, যে কায়দায় বড়দিনের ওই বাজারে লরি নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে, তা ইসলামী উগ্রপন্থিদের সঙ্গে মেলে।

আটক যুবক ছোটখাটো অপরাধের জন্য পুলিশের নজরে থাকলেও জঙ্গিদের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান প্রসিকিউটর।

জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ের জানিয়েছেন, আটক ওই যুবক ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর জার্মানিতে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার প্রক্রিয়া শুরু করেন। পুরনো টেম্পেলহফ বিমানবন্দরের কাছে একটি শরণার্থী শিবিরে তিনি থাকতেন।

এদিকে লরির ভেতরে চালকের পাশের আসনে যে ব্যক্তির লাশ পাওয়া গেছে তিনিই লরির আসল চালক ছিলেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। মৃত ওই ব্যক্তি পোল্যান্ডের নাগরিক ছিলেন।

লরির মালিক অ্যারিয়েল জুরাউইস্কিও পোল্যান্ডের নাগরিক। তিনি জানান, স্থানীয় সময় সোমবার বিকাল ৪টা থেকে তার লরিসহ চালক নিখোঁজ ছিল।

ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, আসল হামলাকারী এখনও মুক্ত এবং তার কাছে অস্ত্র আছে বলে ধারণা করছে জার্মান পুলিশ।

এ কারণে পুলিশ বার্লিনবাসীকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলেছে এবং বড়দিন ও নববর্ষের নিরাপত্তা ব‌্যবস্থা নতুন করে সাজানোর কথা বিবেচনা করছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ‌্যমের তথ‌্য।

 
 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT