আগামী ১৩ জানুয়ারি গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ নদীর তীরে শুরু হচ্ছে দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমা। এবারও পাঁচ স্তরের র্যাব-পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে পুরো ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকা। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবায় ১৪টি অ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। মুসল্লিদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক চিকিৎসক ও ওষুধের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বুধবার সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম।
আগামী ১৩ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা। আগামী ১৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে আখেরি মোনাজাত। মাঝে চার দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব এবং ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০১৭ সালের বিশ্ব ইজতেমা।
সভায় জানানো হয়, ইজতেমা ময়দানের পশ্চিমে তুরাগ নদের ওপর সাতটি পন্টুন ব্রিজ তৈরি করবে সেনাবাহিনী। র্যাব ইজতেমায় আগত ব্যক্তিদের তিন স্তরে নিরাপত্তা দেবে। এ ছাড়া মোটর সাইকেল টহল, নৌ টহল ও হেলিকপ্টারে টহলে থাকবেন র্যাবের সদস্যরা। বিপুলসংখ্যক র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীর সদস্যরা সাদাপোশাকে পুরো ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নেবেন। র্যাবের নয়টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থেকে ইজতেমা ময়দানকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
জেলা প্রশাসক এস এম আলম জাননা, বিশুদ্ধ খাবার নিশ্চিত, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, গ্যাস, চিকিৎসাসেবা বাস্তবায়ন এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন ও পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আগামী ইজতেমা শুরুর আগেই ইজতেমা সম্পর্কিত সব কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সভায় রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ইজতেমার মোনাজাতের দিন ১১৫টি ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে টঙ্গী স্টেশনে। মুসল্লিদের জন্য অজু, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, অতিরিক্ত টিকিট কাউন্টার ও ভ্রাম্যমাণ টিকিট বিক্রি করা হবে। বিআরটিসির ৩৫০টি বাস মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য প্রস্তুত থাকবে। এ ছাড়া বিদেশি মেহমানদের কাকরাইল মসজিদ এবং বিমানবন্দর থেকে ইজতেমা ময়দানে আনার জন্য পর্যাপ্ত এসি বাস বরাদ্দ থাকবে। ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার নতুন একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হবে।
ইজতেমার আগের দিন থেকে ইজতেমা শেষ হওয়ার পরদিন পর্যন্ত পুলিশ মুসল্লিদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে বলে জানান গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সবুর। তিনি বলেন, যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করবে। পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা পার হয়ে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে হবে সবাইকে। এ ছাড়া ইজতেমা শুরুর আগে ২০টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ইজতেমা ময়দানের আশপাশে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ, বিলবোর্ড ও ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হবে বলেও জানান তিনি।