ভারতের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা কক্ষে সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক রামগোবিন্দ চৌধুরির আসনের তলা থেকে বুধবার (১২ জুলাই) সাদা পাউডারের প্যাকেট পাওয়া গিয়েছিলো। ফরেনসিক পরীক্ষার পর জানা গেছে তা মারাত্মক বিস্ফোরক পিইটিএন বা পেন্টাঅ্যারিথ্রিটল টেট্রা নাইট্রেট ছিলো। বিধানসভা ভবনে এ ধরনের বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে লক্ষ্ণৌ এবং দিল্লিতে। শনিবার (১৫ জুলাই) এনআইএ তদন্তের সুপারিশ করেছে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা। বুধবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের আগে রামগোবিন্দ চৌধুরির আসনের তলায় একটি সাদা পাউডার ভর্তি প্যাকেট দেখতে পান পরিচ্ছন্নতাকর্মরা। সাথে সাথে নিরাপত্তা বাহিনীকে ঢাকা হয়। প্যাকেটটি উদ্ধার করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ফরেনসিক দল শুক্রবার (১৪ জুলাই) প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবদনে জানা গেছে উদ্ধার হওয়া ওই সন্দেহজনক পাউডার আসলে পিইটিএন বা পেন্টাঅ্যারিথ্রিটল টেট্রা নাইট্রেট। যা জঙ্গিরা বড় ধরনের নাশকতার ক্ষেত্রে বোমা তৈরির মশলা হিসেবে ব্যবহার করে। এর আগেও বড় বিস্ফোরণে এই প্লাস্টিক বিস্ফোরক ব্যবহার হয়েছে। প্যাকেটটিতে ১৫০ গ্রাম বিস্ফোরক ছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ ভাবে এই বিস্ফোরক শনাক্ত করা খুব কঠিন। এক্স-রে স্ক্যানার কিংবা পুলিশ কুকুরও অনেক সময়ে এই রংহীন বিস্ফোরক খুঁজে পায় না। অথচ সামান্য উত্তাপ বা বিদ্যুতের সংস্পর্শে এলেই মারাত্মক বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে পিইটিএন। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মাত্র ৫০০ গ্রাম পিইটিএন পাউডারই গোটা বিধানসভা উড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বিশ্বের অনেক দেশেই পিইটিএনের কেনাবেচা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শনিবার (১৫ জুলাই) রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরবর্তীতে তিনি বিধানসভায় বলেন, "এটা জঙ্গিদের এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র। বিধানসভার সুরক্ষা আমাদের দায়িত্ব। উত্তরপ্রদেশ সরকার এনআইএ তদন্ত চেয়েছে।" পরে এনআইএ তদন্ত চেয়ে একটি প্রস্তাবও পাশ হয়। বিধানসভায় নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দেওরিয়া জেলার তারকুলবা থানা এলাকা থেকে ২০ বছরের যুবককে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ফারহান আহমেদ নামে ওই যুবক ১৫ অগস্ট বিধানসভা উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে উড়ো ফোন করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ তার মোবাইল আটক করেছে। বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যোগী সরকারের বিরোধী দল কঠোর সমালোচনা করেছে। সমাজবাদী পার্টির নেতা রাজেন্দ্র চৌধুরি বলেন, "প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও অপরাধের ঘটনা ঘটছে। রাজ্যে মেয়েরা সুরক্ষিত নন। আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাও বিপন্ন।" সূত্র: আনন্দবাজার