প্রাথমিক পূর্ব শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যাগ বহন না করতে এবং প্রাথমিক পরবর্তী শিশুদের ক্ষেত্রে শিশুর ওজনের ১০ শতাংশের বেশি নয়, এমন ওজনের ব্যাগ বহনের বিষয়ে ছয়মাসের মধ্যে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বুধবার (০৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
স্কুলে শিশুদের ব্যাগ বহন নিয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী মাসুদ হোসাইন দোলন, মোহাম্মদ জিয়াউল হক ও আনোয়ারুল করিম।
এরপর গত বছরে ১১ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
রিট আবেদনে বলা হয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে স্কুল শিশুদের ব্যাগ বহনে আইন রয়েছে। এতে দেখা যায়, প্রাথমিক পূর্ব শিশুরা ব্যাগ গ্রহণ করে না। প্রাথমিক পর্যায়ের শিশুদের ক্ষেত্রে শিশুর ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ওজনের ব্যাগ বহন করা যায় না। এতে শিশুর স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ে।
রিট আবেদনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।
ওইসব প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জীবনই যদি না বাঁচল, তবে তা আবার কেমন ধারার পড়ালেখা? দিল্লিতে শুরু হলো স্বাক্ষর সংগ্রহ। তার পরিপ্রেক্ষিতে কোন ক্লাসের শিশুরা সর্বোচ্চ কত ওজনের ব্যাগ বইতে পারবে, সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় নীতিমালায় নির্দেশনাও দেওয়া হয়। দিল্লি হাইকোর্ট প্রাক্ স্কুল পর্যায়ে ব্যাগের ওজন শিশুর ওজনের ১০ শতাংশের কম করার নির্দেশ জারি করেন’।
‘সম্প্রতি ইন্ডিয়ান জার্নাল অব পেডিয়াট্রিকস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩০ শতাংশ শিশু বেশি ওজনের ব্যাগ বহনের কারণে পিঠে ব্যথায় ভুগছে। আরেক প্রতিবেদনে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, বেশি ওজনের ব্যাগ বহনের কারণে শিশুদের স্থায়ী শারীরিক ক্ষতি হয়ে থাকে। বয়ঃসন্ধিকালে হাড়ের কাঠামো ঠিক হয়। এ সময় বেশি ওজন বহন করা একেবারে অনুচিত’।
‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতেও শিশুরা এভাবে ভুগছে। গত বছর দেশটির ফেডারেল ন্যাশনাল কাউন্সিল সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ভারি ব্যাগ বহনের কারণে শিশুদের মেরুদণ্ডের স্থায়ী ক্ষতি হচ্ছে। স্পেনেও আছে একই সমস্যা। দেশটির ‘আর্কাইভস অব ডিজিজ ইন চাইল্ডহুড’ শীর্ষক গবেষণায় বলা হয়েছে, স্কুলব্যাগের অতিরিক্ত ওজনে শিশুর পিঠ ব্যথাসহ নানা শারীরিক সমস্যা হয়। একই অবস্থা পাকিস্তানের শিশুদেরও’।