বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের গুলশানের বাড়িসংক্রান্ত মামলায় করা রিভিউ আবেদন কিছু পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এই আদেশের ফলে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে এই বাড়ি ছাড়তে হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
তবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘রিভিউ খারিজ হলেও আমি এই বাড়ি ছাড়ব না। কারণ আদালত এই বাড়ির স্বত্ব সরকারকে দেয়নি। বাড়ি নিয়ে বোঝাপড়া হবে মূল মালিকের সঙ্গে। যদি সরকার আমাকে বাড়ি ছাড়তে বলে আমি আইনগত লড়াই চালিয়ে যাব।’
রোববার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে মওদুদ আহমদের পক্ষে তিনি নিজে ও ব্যারিস্টার রোকনউদ্দীন মাহমুদ শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
এর আগে গত বছর মওদুদ আহমদের গুলশানের বাড়িসংক্রান্ত মামলায় রাজউকের করা আপিল মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে তার ভাই মনজুর আহমদের নামে মিউটেশন (নামজারি) করার জন্য হাইকোর্টের দেওয়া রায়ও বাতিল করেন সর্বোচ্চ আদালত।
পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ করেন মওদুদ আহমদ। ২০১০ সালের ১২ আগস্ট ওই বাড়িটি মনজুর আহমদের নামে মিউটেশন করার জন্য হাইকোর্ট রায় দেন।
রাজউক এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করে ২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ আপিল বিভাগ রাজউককে আপিলের অনুমতি দেন।
আদালত সূত্র জানায়, গুলশানে বসবাসরত মওদুদ আহমদের বাড়ির প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। এক পর্যায়ে বাড়িটির মালিকানার কাগজপত্রে এহসানের স্ত্রীরও নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা বাংলাদেশ ত্যাগ করলে ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। ১৯৭৩ সালের ২ আগস্ট মওদুদ তার ইংল্যান্ডপ্রবাসী ভাই মনজুরের নামে একটি ভুয়া আমমোক্তারনামা তৈরি করে বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ নেন।
এমন অভিযোগ করে দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশিদ ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর অবৈধভাবে বাড়ি দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মওদুদ ও তার ভাই মনজুরের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
তবে মওদুদ আহমদের পক্ষে দাবি করা হয়, বাড়িটি সরকারি সম্পত্তি নয়, ব্যক্তিগত সম্পত্তি। আর মওদুদ আহমদের ভাই ব্যক্তি মালিকের কাছ থেকেই বাড়িটি কিনেছেন।