কলকাতার মুর্শিদাবাদে যাত্রীবাহী বাস বিলের পানিতে পড়ে কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। তীব্র গতিতে পাশ কাটাতে গিয়ে মুর্শিদাবাদের বালির ঘাট সেতু থেকে ভাণ্ডারদহ বিলে পড়ে যায় বাস। এ ঘটনায় আরো আহত হয়েছেন ১৩ জন। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে করিমপুর থেকে একটি বাস মালদহ যাচ্ছিল। সকাল ৭টার দিকে মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদের বালিরঘাট সেতুর উপর দিয়ে যাওয়ার সময়ে রেলিং ভেঙে পানিতে পড়ে যায় বাসটি। বাসটি ৭০ ফুট গভীর বিলের তলদেশে পলির মধ্যে আটকে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা ১০ জনকে উদ্ধার করেন। তবে উদ্ধারের পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধা মারা যান। সে সময় তিন জনের লাশও উদ্ধার করা হয়। পরে সন্ধ্যায় ক্রেন দিয়ে তুলে আনার চেষ্টা করা হয় বাসটিকে। তবে তা সম্ভব হয়নি। তবে ঝুলন্ত সেই বাস থেকেই উদ্ধার হয় আরও ৩২ জনের মরদেহ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র-সহ প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিহতের পরিবারকে ৫ লাখ, গুরুতর আহতদের ১ লাখ এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। উদ্ধারকাজ শুরু হতে দেরি হওয়ায় ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। ইটবৃষ্টিতে আহত হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অনীশ সরকার এবং দুই সংবাদকর্মী। ভাঙচুর করা হয় দমকলের ইঞ্জিন। টোলগেটে লুঠপাট হয়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। যদিও জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার তা অস্বীকার করেছেন। শেষে বেলা সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ ক্রেন এসে পৌঁছয়। ঢিমেতালে হলেও শুরু হয় উদ্ধারের কাজ। নদীয়ার কৃষ্ণনগর থেকে ডুবুরিরা এসে জলে নামেন। পরে হরিণঘাটা থেকে নৌকা এবং নানা সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছন ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের ৪৮ জন সদস্য। তার পরেই প্রকৃত অর্থে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। চারটি ক্রেন দিয়ে টেনে বাসের সামনের দিকটা জল থেকে খানিক তোলার পরে দেহ বের করা হতে থাকে। রাত পৌনে ৮টায় জল থেকে তোলা হয় ফাঁকা বাসটি।
সূত্র: আনন্দবাজার