বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
রাষ্ট্রীয় ও বহুজাতিক কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আনার উদ্যোগ
প্রকাশ: ১১:০৪ am ২২-০৭-২০১৭ হালনাগাদ: ১১:০৭ am ২২-০৭-২০১৭
 
 
 


পুঁজিবাজারে চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ও বহুজাতিক কোম্পানিকে কীভাবে তালিকাভুক্ত করা যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এজন্য শিগগিরই কোম্পানি, নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে চিঠি দেবে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী সপ্তাহে চিঠিগুলো ইস্যু করা হতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে দীর্ঘ মন্দা কাটিয়ে দেশের পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। এতে দেশের পুঁজিবাজারে একধরনের চাহিদা তৈরি হয়েছে। এখন শেয়ার সরবরাহের সময় এসেছে বলে মনে করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে বহুজাতিক অনেক কোম্পানি এ দেশে এসে একচেটিয়া ব্যবসা করলেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। অন্য দেশে এসব কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। এর মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, থাইল্যান্ড ও অন্যান্য দেশে তালিকাভুক্তির নজির রয়েছে। বর্তমানে বহুজাতিক ও জয়েন্টভেঞ্চার মিলে প্রায় ১৭টি কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির কারণে এসব কোম্পানি ১০ শতাংশ কর অবকাশ সুবিধা পায়। বিনিয়োগকারীদেরও এসব কোম্পানির ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে। ফলে বর্তমানে এসব কোম্পানির বাজার মূলধন ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলোর শেয়ার বাজারে ছাড়তে বেশ কয়েকবার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো নানা কারণ দেখিয়ে শেয়ার বাজারে ছাড়তে পারেনি। এ ক্ষেত্রে যুক্তি দেখানো হয়, কোম্পানি লোকসানে আছে বা সম্পদের মূল্যায়ন বা পুনর্মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়নি। আবার কখনও বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি ইত্যাদি। এজন্য অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে একটি বৈঠক আহ্বানের নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও সরকারি কোম্পানিগুলোর শেয়ার কেন মার্কেটে ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না-তা সভায় চিহ্নিত করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সকালের খবরকে জানান, রাষ্ট্রীয় এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ার বাজারে আনার প্রয়াস অব্যাহত আছে। তবে ইতোমধ্যেই অনেক কোম্পানির শেয়ার বাজারে এসেছে। আবার অনেকগুলোর শেয়ার বাজারে ছাড়া হচ্ছে না। তাই বিষয়টি এখন অর্থমন্ত্রী নিজেই তত্ত্বাবধান করতে চান। এ বিষয়ে খুব দ্রুত কোম্পানিগুলোকে চিঠি দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বসে করণীয় ঠিক করা হবে বলে জানান তিনি। সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সরকারি ৩৪ কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে ওই সময় সে উদ্যোগ বেশি দূর এগোয়নি। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে বাজারে ভালো শেয়ারের সঙ্কট দেখা দেয়। এরপর সঙ্কট কাটাতে সরকারি কোম্পানিকে বাজারে আনার উদ্যোগ শুরু হয়। ২০১০ সালের ১৩ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয় এক বৈঠকে সরকারি কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে রেখে বাকি শেয়ার পাবলিকের মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সময় কোম্পানিগুলোকে ২০১০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেয়ার ছাড়তে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আরেকটি বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়ে কোম্পানিগুলোকে শেয়ার ছাড়ার তাগিদ দেওয়া হয়। কিন্তু সে নির্দেশনার খুব বেশি প্রতিফলন দেখা যায়নি। ঢাকার শেয়ারবাজারে ২৯৬টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৭টি বহুজাতিক কোম্পানি। অথচ বাংলাদেশে প্রায় ৪১টি বহুজাতিক কোম্পানি রয়েছে। শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিতে এসব কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT