বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য দেড় হাজার একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে
প্রকাশ: ০৯:১৮ am ১০-০৯-২০১৭ হালনাগাদ: ০৯:২০ am ১০-০৯-২০১৭
 
 
 


মিয়ানমার থেকে সম্প্রতি অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য দেড় হাজার একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের কুতুপালং এলাকা থেকে বালুখালী পর্যন্ত বিস্তৃত এই জমির মালিক কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ। ইতোমধ্যে যেসব রোহিঙ্গা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে আশ্রয় নিয়েছে তাদের সকলকে পর্যায়ক্রমে বালুখালীতে নিয়ে যাওয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। সম্প্রতি গঠিত রোহিঙ্গা নিয়ন্ত্রণ সেলের প্রধান ও কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মাহমুদ সকালের খবরকে জানান, সদ্য অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের নির্দিষ্ট একটি স্থানে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যাতে পরবর্তী সময়ে তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ হয়। নতুন অনুপ্রবেশ করা সকল রোহিঙ্গাকে বালুখালীতে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া গতকাল থেকে শুরু হয়েছে। তারা যাতে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় গড়তে পারে তার জন্য আজ থেকেই বালুখালীতে কাজ শুরু করবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। তারা রোহিঙ্গা পরিবারগুলোকে ঘর নির্মাণের জন্য বাঁশ ও পলিথিন সরবরাহ করবে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নতুন করে কত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। সেই তথ্য পাওয়া গেলে সকল রোহিঙ্গাকে এক স্থানে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় জমি নেওয়া হবে। ওই এলাকায় রোহিঙ্গাদের এক স্থানে রাখার মতো খাস জমি আমাদের নেই। তাই বন বিভাগের জমিতে তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে আগেই কিছু রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছিল। নতুন করে আরও যোগ হয়েছে। উখিয়ার কুতুপালংয়ে এবং টেকনাফের নয়াপাড়ায় বর্তমানে দুটি নিবন্ধিত শরণার্থী শিবির রয়েছে। ওই দুটি শিবিরে বসবাস করছে প্রায় ৩৪ হাজার রোহিঙ্গা। কুতুপালংয়ে আরেকটি অনিবন্ধিত শিবিরে নতুন-পুরনো মিলিয়ে আছে অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার তথ্যমতে, গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে ২ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দীন বলেন, কানুনগো, সার্ভেয়ারের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বালুখালীতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে সেটি হবে রোহিঙ্গাদের নতুন ঠিকানা।   কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আলী কবির বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য যে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে ওই জমির মালিক বন বিভাগ। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারেই সেখানে রোহিঙ্গাদের শিবির হচ্ছে। ওই জায়গাটিতে গাছপালা তুলনামূলকভাবে কম। আলী কবির আরও জানান, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম ও পুলিশ সুপার। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নতুন অনুপ্রবেশ করা সকল রোহিঙ্গাকে এক জায়গায় রাখার নির্দেশনা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জমি চিহ্নিত করার কাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন ও উখিয়া উপজেলা প্রশাসন। এদিকে গতকাল দুপুরে কক্সবাজারের টেকনাফের নয়াপাড়া শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে গিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের এক জায়গায় নিয়ে এসে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। মিয়ানমারে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো হবে। ইতোমধ্যেই উখিয়ায় জায়গা চিহ্নিত করে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইতোমধ্যে কত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও তিন লক্ষাধিক রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম, টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন সিদ্দিক, নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্প ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম, টেকনাফ থানার ওসি মো. মাইন উদ্দিন খান প্রমুখ।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT