আগামী বছরের ১৩ জানুয়ারি (শুক্রবার) শুরু হবে দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপ। ১৫ জানুয়ারি (রোববার) প্রথম ধাপ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
এরপর চারদিন বিরতি। ফের ২০ জানুয়ারি (শুক্রবার) শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপ। একইভাবে ২২ জানুয়ারি (রোববার) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০১৭ সালের ৫২তম বিশ্ব ইজতেমা।
ইজতেমায় অংশ নেওয়া মুসল্লিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গত বছর থেকে দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লিদের দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এক বছর পর পর ৩২ জেলার মুসল্লিরা ইজতেমায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।৩২ জেলার মুসল্লিরা দুই ভাগে ১৬ জেলা করে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেবেন।
গত বছর যে ৩২ জেলার মুসল্লিরা দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিয়েছিলেন, ওই ৩২ জেলার মুসল্লিরা এ বছর ইজতেমায় অংশ নিতে পারবেন না।
টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা গেছে, স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা ইজতেমার মাঠে প্রস্তুতিমূলক কাজে সহায়তা করছেন।
কেউ খুঁটির উপর চট টাঙাচ্ছেন, কেউ লোহার খুঁটি ও পাইপ দিয়ে মূল মঞ্চ তৈরি করছেন, কেউ টয়লেট নির্মাণের কাজ করছেন, কেউবা পরিষ্কার ও বালু দিয়ে মাঠ সমান করছেন। হাসি-মুখে আনন্দের সঙ্গে সবাইকে ইজতেমা ময়দানে বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কাজ করতে দেখা গেছে।
দলবদ্ধ হয়ে ভাগ করে ইজতেমার প্রস্তুতিমূলক কাজ করা হচ্ছে। মুসল্লিদের তুরাগ নদ পারাপারের জন্য স্থাপন করা হবে কয়েকটি ভাসমান সেতু।
বিদেশি মুসল্লিদের থাকার জন্য ইজতেমা মাঠের উত্তর-পশ্চিম পাশে তুরাগ পাড়ে টিন-চট দিয়ে বিশেষ কামরা নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বিদেশি আবাসনের পশ্চিমে তুরাগ পাড়ে তাদের রান্নার চুলা ও রন্ধনশালা নির্মাণ করা হচ্ছে।তাবলিগ জামায়াতের উদ্যোগে প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় গাজীপুরে টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে। ১৬০ একর বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ইজতেমা মাঠে বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলিগ জামায়াত অনুসারী ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশ নেন। বিশ্ব ইজতেমায় তাবলিগ জামায়াতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন। পরে ইসলামের দাওয়াত বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেওয়ার জন্য জামায়াতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।
ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের তাবলিগ অনুসারীরা মিলিত হন তুরাগ পাড়ে।
মুরুব্বি গিয়াস উদ্দিন আরও জানান, আগামী ১৩ জানুয়ারির আগেই বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ইতোমধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ হয়েছে। এখানে বিদ্যুৎ, পানি, প্যান্ডেল তৈরি, গ্যাস সরবরাহ প্রতিটি কাজই আলাদা আলাদা গ্রুপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে।
এবার ২০১৭ সালে ৫২তম ইজতেমার দুই পর্বে অংশ নেওয়া ৩২ জেলাগুলো হলো- গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গোপলগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, সৈয়দপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, জয়পুরহাট, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, যশোর, বাগেরহাট, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালি, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, বরিশাল ও সাতক্ষীরা।