অনেক চেষ্টার পরও বাঁচানো গেলো না কলেজছাত্র রাজীব হোসেনকে। দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন থাকা রাজীব মারা গেছেন।
সোমবার (১৬ এপ্রিল) দিনগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন আইসিইউর চিকিৎসকরা। আইসিইউ’র চিকিৎসক ডা. রেজার বরাত দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন রাজীবের চাচা আল আমিন। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়াও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাজীবের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে খবর পেয়ে মধ্যরাতেই ঢামেকে ছুটে আসেন তার স্বজনরা। এদের মধ্যে আল আমিন ছাড়াও রয়েছেন রাজীবের মামা জাহিদুল ইসলাম ও খালাতো বোন রাবেয়া।
আল আমিন বলেন, চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন লাইফ সাপোর্টে থাকা রাজীবের অবস্থার অবনতি হয় ১১টা ৩০ মিনিটে। রাত ১২টা ৪০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে বিআরটিসি বাসের সঙ্গে স্বজন পরিবহনের বাস টক্কর দিতে গেলে বাস দু’টির চিপায় পড়ে ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রাজীবের। সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের এ ছাত্রকে তাৎক্ষণিক নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরদিন ঢামেকে নিয়ে আসা হয়। সেখানে সরকারের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামের রাজীব তৃতীয় শ্রেণিতে থাকাকালে মাকে এবং অষ্টম শ্রেণিতে থাকাকালে বাবাকে হারান। এরপর মতিঝিলে খালা জাহানারা বেগমের বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। মহাখালীর তিতুমীর কলেজে স্নাতকে ভর্তি হওয়ার পর যাত্রাবাড়ীতে মেসে ভাড়ায় থেকে পড়াশোনা করছিলেন রাজীব। এর পাশাপাশি তিনি একটি কম্পিউটারের দোকানেও কাজ করছিলেন। নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট দুই ভাইয়ের খরচও চালাতে হতো রাজীবকে।
রাজীবের হাত বিছিন্ন করে ফেলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৪ এপ্রিল বিআরটিসি বাসের চালক ওয়াহিদ (৩৫) ও স্বজন বাসের চালক খোরশেদকে (৫০) গ্রেফতার করা হয়। ৫ এপ্রিল দু’জনকে আদালতে তোলা হলে তাদের দুই দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। ৮ এপ্রিল দু’জনকে পাঠানো হয় কারাগারে। সোমবার দুই আসামির পক্ষ থেকে জামিন আবেদন করা হলেও নামঞ্জুর করেন আদালত।