২০১৬ সালে ৪ হাজার ৩১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ৫৫ জন। এতে আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৯১৪ জন। বাংলাদেশ সড়ক দুর্ঘটনাপ্রতিবেদন-২০১৬'তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সংগঠনটি বলছে, বেপরোয়া গাড়ি চালানো, চালকদের বেপরোয়া মনোভাব, বিপদজনক অভারটেকিং সহ নানাবিধ কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রসক্লাবে সংবাদ সম্মলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
এছাড়াও হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো, রাস্তা নির্মাণে ক্রটি, গাড়ির ক্রটি, যাত্রীদের অসতর্কতা, ট্রাফিক আইন না মানাও সড়ক দুর্ঘটনার কারণ বলেও উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়- সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে ৬ হাজার ৫শ’টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৬শ’ জন নিহত ও ২১ হাজার ৮৫৫ জন আহত হয়েছেন। যা ২০১৬ সালের তুলনায় বেশি। এত দেখা গেছে, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে মোট সড়ক দুর্ঘটনা ৩৪.৪৮ শতাংশ, নিহত ২৯.৯৪ শতাংশ এবং আহত ২৭.১৮ শতাংশ কমেছে।
প্রতিবদনটি প্রকাশ করেন সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি জানান, জিডিপির দেড় শতাংশ এ সড়ক দুর্ঘটনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে বাড়ছে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে ছিন্নমূলের সংখ্যা। যা মধ্যআয়ের দেশ গড়তে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক জানান, প্রকৃত আহত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। কারণ সড়ক দুর্ঘটনার অনেক তথ্যই সংবাদমাধ্যমে আসে না।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ব্যাপক আকারে প্রচার প্রচারণা, সড়কের পাশের হাটবাজার অপসারণ, জেব্রাক্রসিং অংকন, চালকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন মোজাম্মেল হক।
এছাড়াও সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবার যদি দরিদ্র হয় সেক্ষেত্রে তাদের ভোরণ পোষণের দায়িত্ব সরকারকে বহন করার প্রস্তাবও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কমলেও তা সন্তোষজনক নয়। এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দুর্ঘটনাকে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সরকারের নানামুখী কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল করতে হবে।
এতে উপস্থিত সাবেক যোগাযোগ সচিব বলেন, ২০১৫ সালের তুলনায় গত বছর সড়ক দুর্ঘটনা কমে এসেছে, এটি একটি ইতিবাচক দিক। তবে, সড়ক দুর্ঘটনা প্রবণতা আরও কমিয়ে আনতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রাইভেট সেক্টরকেও সম্পৃক্ত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, লোকাল এমপি থেকে শুরু করে ইউপি চেয়ারম্যানকেও সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত রাখতে হবে। এ জন্য সরকারকে তাদের নিজ নিজ এলাকা ভাগ করে দিতে হবে তদারকির জন্য।
এছাড়াও যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন করে তার বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনার মতো মর্মান্তিক ঘটনাগুলো এড়ানো সম্ভব বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ট্রাক ও ক্যাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক আহমেদ হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফরাদ প্রমুখ।