শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ১৬টি গাড়ি অপব্যবহারের অভিযোগ বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে এনেছিল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এ অভিযোগের পাঁচ দিন পর ১৬টি গাড়ির মধ্যে দুটি গাড়ি জমা দিয়েছে সংস্থাটি। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিস দুটি গাড়ি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে হস্তান্তর করে।
১৫ ফেব্রুয়ারি এই ১৬টি গাড়ির খোঁজসহ যাবতীয় কাগজপত্র এবং ব্যবহারকারী কর্মকর্তাদের বর্তমান অবস্থান সাত দিনের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই দিন এ-সংক্রান্ত চিঠি বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্বব্যাংকের হস্তান্তর করা গাড়ি দুটির ব্যবহারকারী ছিলেন ফিনল্যান্ডের মির্ভা তুলিয়া ও ভারতের নাগরিক মৃদুলা সিং।
মির্ভা তুলিয়া ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যালয়ে কমিউনিকেশনস স্পেশালিস্ট এবং মৃদুলা সিং ২০১৩ সালের মার্চ থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সিনিয়র সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশে অবস্থানের সময় তাঁরা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য গাড়ি দুটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় কিনেছিলেন।
এর আগে গতকাল রোববার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ঢাকা অফিস থেকে ব্যবহৃত একটি সাদা রঙের টয়োটা সিডান মডেলের প্রাইভেট কার শুল্ক গোয়েন্দাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মইনুল খান বলেন, আইন অনুয়ায়ী তাঁরা বাংলাদেশ ছাড়ার আগে ব্যবহৃত কাস্টমস পাসবুক ও ব্যবহৃত গাড়ি দুটি শুল্ক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে যাননি। গতকাল রোববার ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের দপ্তর থেকে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তরে উপস্থিত হয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করেন।
এ আলোচনার সূত্রে আজ প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান স্বাক্ষরিত চিঠিতে সংস্থাটির পক্ষে গাড়ি দুটি শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গাড়ি দুটি বর্তমানে শুল্ক গোয়েন্দা সদর দপ্তরে রাখা হয়েছে। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সম্প্রতি এনবিআরের এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ৩৯৫ জন বিদেশি নাগরিক, যাঁরা এ দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন, কাজের মেয়াদ শেষে তাঁরা শুল্কমুক্ত গাড়ি-সুবিধার অনুকূলে ইস্যু করা পাসবইগুলো এনবিআরে ফেরত দেননি। এ তালিকায় বিশ্বব্যাংক, জাইকা, ইউএনডিপিসহ ২৫টি উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের ৫৩ জন কর্মকর্তা আছেন।
এর আগে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এসব পাসবই জমা দেওয়ার সময় বেঁধে দিয়েছিল শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। তখন বিশ্বব্যাংক জমা না দেওয়া ৩৫টি পাসবই ফেরত দিয়েছে।