বিপুল বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারের মধ্য দিয়ে ঝিনাইদহে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটিতে অভিযান শেষ করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।
শনিবার বেলা ২টার দিকে অভিযান শেষ হয়।
ঘটনাস্থল ত্যাগ করার আগে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সেখানে প্রেস ব্রিফিংয়ে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহাম্মদ অভিযান শেষ হওয়ার কথা জানান।
বাড়িটিতে ২০টি কেমিক্যাল কন্টেইনার, তিনটি সুইসাইডাল ভেস্ট, নয়টি সুইসাইডাল বেল্ট, ১০০ প্যাকেট লোহার বল, বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, বোমা তৈরির বৈদ্যুতিক সার্কিট, বিপুল পরিমাণ গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম, একটি মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন জিনিস উদ্ধার করা হয় বলে জানান দিদার।
বেলা ১০টার দিকে অভিযান শুরুর পর দিদার বলেছিলেন, “সেখানে ইতোমধ্যেই কিছু বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ১৪টি তরল পদার্থ ভরা কন্টেইনার। ৩০ লিটারের এসব কন্টেইনারের লেবেলে ‘হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড’ লেখা রয়েছে।”
উদ্ধার করা সরঞ্জাম দিয়ে শতাধিক শক্তিশালী বোমা তৈরি করা যাবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এক কর্মকর্তা জানান।
শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের আব্দুল্লাহ নামে ধর্মান্তরিত এক ব্যক্তির এই বাড়িটি ঘেরাও করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
অভিযান চালানোর জন্য পুলিশের পাশাপাশি কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের ৩০ সদস্যের একটি দল ঢাকা থেকে ঝিনাইদহ আসে।
শহর থেকে পূর্বদিকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে ঝিনাইদহ-মাগুরা সড়ক থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার ভেতরে বাড়িটির অবস্থান।
বাড়িটি ঘিরে ফেলার পর কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. ছানোয়ার হোসেন বলেছিলেন, “বাড়িতে প্রচুর কেমিক্যাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। কয়েকটা সুইসাইডাল ভেস্ট দেখা যাচ্ছে।বাড়িটিকে নব্য জেএমবির সদস্যরা বোমা তৈরির কারখানা হিসেবে ব্যবহার করত।”
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, দুই কক্ষের টিনের এই বাড়ির মালিক আব্দুল্লাহ পাঁচ বছর আগে হিন্দু ধর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণ করেন।
অভিযান শুরু পর বাড়িটিতে কেউ না নেই এবং সেখানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক রয়েছে বলে ধারণা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপকমিশনার মহিবুল ইসলাম খান।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহে অন্তত সাতটি বাড়িতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের পর পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হক এ মাসের শুরুতেই বলেছিলেন, এ ধরনের আরও জঙ্গি আস্তানা দেশে রয়েছে।