আইন ও বিচার বিভাগের সচিব হিসেবে আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের স্থগিতাদেশ স্থগিত করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। ফলে আগামী আট সপ্তাহ আইন সচিব হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন কৌঁসুলিরা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আইন সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, এ সংক্রান্ত এক রুলের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই আদেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি আইন সচিবের পক্ষের আইনজীবীরা আদালতের কাছে সময় চান। আদালত তা নাকচ করে ওই আদেশ দেন। হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে। দুপুর দেড়টার পর চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাইকোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। ফলে আইন সচিব নিয়োগের বৈধতা পায় বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খন্দকার দিলীরুজ্জামান। তিনি আরও জানান, আইন মন্ত্রণালয়ে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব জহিরুল হকের দায়িত্ব পালনে আইনগত কোনো বাধা নেই। এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের জানান, সচিব জহিরুল হক আগে বিচার বিভাগের কর্মকর্তা থাকলেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার সময় তিনি সাধারণ নাগরিকে পরিণত হন। যেকোনো উপযুক্ত নাগরিককে রাষ্ট্রপতি তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে পারেন। তাছাড়া সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। তাই চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে সঠিক কাজটি করেছেন। অন্যদিকে রিটপক্ষ আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে বলে জানা গেছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও আফতাবুজ্জামান। আইন সচিবের পক্ষে আরও ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, আবদুল বাসেত মজুমদার, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু ও অমিত তালুকদার। গত ৭ আগস্ট অবসরে যাওয়ার কথা ছিল জহিরুল হকের। এর আগের দিন আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান জহিরুল হক। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে অবসর-উত্তর ছুটি বাতিল করে দু’বছরের জন্য তাকে ওই পদে নিয়োগ দেয় সরকার। ৭ আগস্ট তিনি ওই পদে যোগদান করেন। ৮ আগস্ট সচিব জহিরুল হকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আশরাফ-উজ-জামান। একই দিন সচিব জহিরুল হকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেন হাইকোর্ট। পরে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রিটপক্ষ। এরই ধারাবাহিকায় গতকাল ওইসব আদেশ হয়। এর আগে ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জহিরুল হক আইন ও বিচার বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।