আগামী অন্তত সাত থেকে আট দিন ঢাকাসহ সারা দেশেই বৃষ্টিপাত হবে। তবে এই বৃষ্টি আরো বাড়বে তিন দিন পর। সেই সঙ্গে বাড়বে বৃষ্টিপাতের ব্যপ্তি। বৃষ্টিপাতে রাস্তাঘাটে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর বৃষ্টিতে বিঘ্নিত হতে পারে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট সিরিজও।
গত দু’দিন ধরে ঢাকাসহ সারা দেশে বৃষ্টিপাত বেড়েছে। বর্ষাকালের শেষে অবিরাম বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উত্তরাঞ্চল ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়। সেই পানি নেমে আসতে গিয়ে মধ্যাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে, তবে মাত্রাটা কম।
গত ১৫ আগস্ট থেকে সারা দেশে অবিরাম বৃষ্টিপাত শুরু হয়। মাঝখানে তিন চার-দিন বিরতি দিয়ে আবারও গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় সর্বোচ্চ ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভোররাতের বৃষ্টির কারণে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার সড়কে পানি জমে অফিসগামী মানুষ যানজটের মধ্যে চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন জানান, গতরাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ৬৭ মিলিমিটার, ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ৭ মিলিমিটার এবং ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে ঢাকায়। ঢাকা ছাড়াও ফেনী ও সিলেটে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। উপরের দিকে রংপুর বা রাজশাহী অঞ্চলে কম বৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান আরিফ হোসেন।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, বিদ্যমান বৃষ্টিপাত আগামী ২৫ বা ২৬ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এরপর ২৭ থেকে আরো বেড়ে ৩১ আগস্ট বা ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে ব্যাপ্তিও বাড়বে। অর্থাৎ দেশের অধিকাংশ এলাকা বৃষ্টির মুখে পতিত হবে। ১ সেপ্টেম্বরের পর বৃষ্টি বাড়বে কিনা- তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
আর ঈদের দিনের বৃষ্টিপাতের নির্দিষ্ট করে খবরের জন্য আরও দু’দিন দিন অপেক্ষা করতে বলছে আবহাওয়া অধিদফতর।
তবে আবহাওয়ার উপর বিশেষায়িত আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইটগুলো বলছে, চলমান বৃষ্টিপাত অন্তত ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। ঈদের দিন সকালটায় আকাশ পরিষ্কার থাকারই কথা। তবে বিকেলে বজ্রঝড় হতে পারে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২ বা ৩ সেপ্টেম্বর ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস ৩১ আগস্ট বৃহস্পতিবার। এর আগে থেকে ঈদযাত্রা শুরু হলেও শেষ কর্মদিবসে ঢল নামবে রাস্তায়। ফলে বৃষ্টি এবং অতিরিক্ত চাপে যানজট ও ভোগান্তি তৈরি হতে পারে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলে আসছেন, বৃষ্টি হলে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করা চ্যালেঞ্জ হয়েই উঠবে। সেক্ষেত্রে অস্বস্তির শঙ্কাটা থেকেই যাচ্ছে। কারণ আগের বৃষ্টিতে ভাঙাচোরা রাস্তায় যান চলাচলে এখনই বাড়তি ভোগান্তি তৈরি হয়েছে। অতিরিক্ত সময় যাচ্ছে রাস্তায়।
সেই সাথে আগামী ২৭ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ সফরে আসা অস্ট্রেলিয়ার সাথে ঢাকা টেস্টেও বাগড়া ফেলতে পারে বৃষ্টি।
এদিকে, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ঈদের আগে ও পরের ৫ দিন করে সিএনজি স্টেশন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা, আগের তিন দিন ট্রাক-লরি-কাভার্ড ভ্যাচ চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এছাড়া ভারী যান চলাচল ঈদের আগের তিন দিন বন্ধ থাকবে।
অন্যদিকে, বন্যার পানি ক্রমেই কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে গেলেও আর বন্যার অবনতি হবে না বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।