আজ স্বপ্নের পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় স্প্যান বসছে । মাওয়া প্রান্ত থেকে যাত্রা শুরু করে প্রায় সাতদিন পর স্প্যানটি নিয়ে যাওয়া হয়েছে জাজিরা প্রান্তে নির্ধারিত পিলারের কাছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পিলারের ওপর স্প্যান বসানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা।
মাওয়ার বিশেষায়িত ইয়ার্ড থেকে পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় স্প্যানটি বের করে ভাসমান ক্রেনে তোলা হয় গত শনিবারেই। শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পলি জমি তলদেশের গভীরতা কমে যায়, তাই আগেই ড্রেজিং করে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিলো ৩৬শ টন ওজন বহনে সক্ষম বিশ্বের সর্বাধুনিক এ ক্রেনের চলার পথ।
পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়েছিলো গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর। জাজিরা প্রান্তের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে বসানো হয় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ স্প্যান। এরপর প্রস্তুত করে তোলা হয় ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারও। ইয়ার্ডে আগেই তৈরি ছিলো দ্বিতীয় স্প্যান। তবে গ্রাউটিংসহ নানা কারিগরি জটিলতার কারণে ডিসেম্বর মাসে স্প্যানটি বসানোর কথা থাকলেও সেটা হয়নি। পিলারের সঙ্গে স্প্যান জোড়া লাগানোর গ্রাউটিং সমস্যা সমাধানে ভারতীয় প্রকৌশলীরা ব্যর্থ হলেও পরে চীনের প্রকৌশলীরা সমাধান করেন তা। এরপরই শুরু হয় স্প্যান পিলারের কাছে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া।
পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ' গ্রাউটিংয়ের আমাদের নয়টি ট্রায়াল আছে। দুইটা হয়ে যাওয়া কথা। কিন্তু সমস্যার কারণে সঠিক সময়ে করা যায়নি।'
প্রথম স্প্যানটি শুধুমাত্র দুটি পিলারের মধ্য বসিয়ে দেয়া গেলেও দ্বিতীয় স্প্যানের ক্ষেত্রে ভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এটি শুধু বসিয়ে দিলেই হবে না, একই সঙ্গে জোড়া দিতে হবে প্রথম স্প্যানের সঙ্গে। ২০ জানুয়ারি স্প্যানটি যাত্রা শুরু করলেও প্রায় ৬ মিটার দুরে নিয়ে এটি অপেক্ষমান রাখা হয় একদিন। তাছাড়া ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলার দু'টি স্প্যানের ভর নিতে পারবে কিনা, সেটাও স্প্যান বসানোর আগে একই পরিমাণ ভর চাপিয়ে পরীক্ষা করে নিতে হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, 'কোয়ালিটি আমাদের প্রথম লক্ষ্য। কোয়ালিটি কোনো ঘাটতি রাখা যাবে না। তাড়াহুড়া করার বিষয়ও এটা।'
এ পর্যন্ত দেশের ইয়ার্ডে ১০টি স্প্যানের ফ্যাব্রিকেশনের কাজ শেষ হয়েছে এবং চীনে আরো ১৬টি স্প্যান শিপমেন্টের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিটিতে ৬টি করে সেতুর ৪২টি পিলারে মোট ২৪০টি পাইলের মধ্যে ৯৩টির কাজ পুরো এবং ১১টির কাজ আংশিক শেষ হয়েছে।