আপন জুয়েলার্সের ৪ শাখায় অভিযানে মোট ২৮৬ কেজি স্বর্ণালংকার ও ৬১ গ্রাম হীরা আটক করা হয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৮৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। অন্যদিকে আপন জুয়েলার্সের গুলশান অ্যাভিনিউ শাখা বন্ধ থাকায় তা সিলগালা করা হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দার অভিযানে ওই অলংকার প্রতিষ্ঠাগুলোর জিম্মায় রাখা হয়েছে। ওই সব পণ্যে কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে কোনো অনিয়ম প্রমাণিত হলে এই প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান মালিকদের বিরুদ্ধে চোরাচালান ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রোববার অভিযান শেষে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের ড. মইনুল খান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
শুল্ক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে রোববার সকাল থেকে আপন জুয়েলার্স, ডিসিসি মার্কেট শাখা, আপন জুয়েলার্স, সীমান্ত স্কোয়ার শাখা, আপন জুয়েলার্স, উত্তরা শাখা, আপন জুয়েলার্স, মৌচাক শাখা এবং আপন জুয়েলার্স, গুলশান অ্যাভিনিউ শাখায় একযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে।
অভিযানে আপন জুয়েলার্স মৌচাক মার্কেট শাখায় ৫৩ কেজি ৫১৮.০২ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও ১৭.৩৫ গ্রাম হীরা , সীমান্ত স্কোয়ার শাখায় ৮১ কেজি ৬৮৮.৬ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও ৩৩.৪৪ গ্রাম হীরা, উত্তরা শাখায় ৮২ কেজি স্বর্ণালঙ্কার ও ৯.৭ গ্রাম হীরা এবং ডিসিসি মার্কেট শাখায় ৬৮ কেজি ৪৬২.৩০ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়।
তবে আপন জুয়েলার্স, গুলশান অ্যাভিনিউ শাখা বন্ধ থাকায় এটি সিলগালা করা হয়, যা পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ইনভেন্ট্রি করা হবে।
আপন জুয়েলার্সের ৫টি শাখার ৪টির অভিযানে মোট ২৮৬ কেজি স্বর্ণালংকার ও ৬১ গ্রাম হীরা পাওয়া গেছে। স্বর্ণের মোট মূল্য ৮০ কোটি ২৩ লাখ টাকা ও হীরার মূল্য ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা। অর্থ্যাৎ সর্বমোট ৮৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকার স্বর্ণালংকা ও হীরা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ওই অলংকার শুল্ক আইনে প্রতিষ্ঠাগুলোর জিম্মায় রাখা হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা সূত্র আরো জানায়, অভিযানে স্বর্ণ ও হীরার বৈধ উৎস ও পরিশোধযোগ্য শুল্ককরাদি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে আপন জুয়েলার্সের এ সকল শাখা কর্তৃক উপস্থাপিত দলিলাদি অভিযান পরিচালনাকারী দলের নিকট অপর্যাপ্ত প্রতীয়মান হয়েছে। তাছাড়া উপস্থাপিত দলিলাদিতে উল্লিখিত স্বর্ণ ও হীরার পরিমাণের সাথে ইনভেন্ট্রিকৃত স্বর্ণ ও হীরার পরিমাণের গরমিল পাওয়া যায়। উপস্থাপিত দলিলাদি অধিকতর পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ২৮ মার্চ দ্য রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে আমন্ত্রণ করে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত ও তার বন্ধুরা। গত শনিবার রাতে ভুক্তভোগীদের একজন বনানী থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। সাফাত ছাড়াও ওই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নাঈম আশরাফ (৩০), সাদমান সাকিফ (২৭), সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল (২৬) ও অজ্ঞাতনামা দেহরক্ষী।