লাভের আশায় আগাম জাতের আলু চাষ করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে ঠাকুরগাঁয়ের আলু চাষিদের। মৌসুমের শুরুতে কিছুটা দাম থাকলেও এখন প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪-৫ টাকা কেজি দরে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন আলু চাষী কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ২১ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় এবং ২৩ হাজার ৪শ ১৫ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়। বিশেষ করে সদর উপজেলার নারগুন, বেগুনবাড়ি, কহরপাড়া ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দোগাছি, মধূপুর সহ ৫/৭টি গ্রামে আগাম জাতের আলু চাষ করা হয়। আলুর আবাদও হয়েছে ভাল। মৌসুমের শুরুতে বাজারে প্রতিকেজি আলু ৩০-৩২ টাকা দরে বিক্রি হয়। ক্রমান্বয়ে আলুর দাম কমতে কমতে ১৫-২০ টাকায় পৌছায়। এদিকে গত এক সপ্তাহ থেকে সে দাম আরো কমে গিয়ে ৪-৫ টাকায় এসে পৌছেছে।
সদর উপজেলা পটুয়া গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম জানান, তিনি এবার এনজিও থেকে বেশি সুদে ঋণ নিয়ে ২ বিঘা জমিতে আলু আবাদ করেন। উৎপাদনও হয়েছে বেশ ভাল। কিন্তু আলু হতে দেরী হওয়ায় তিনি এখন মহা বিপদে পড়েছেন। বাজারে আলুর দাম না থাকায় না পারছেন এনজিওর ঋণের কিস্তি দিতে না পারছেন আলু মজুদ করতে।
অপরদিকে সদর উপজেলার নারগুন এলাকার আলু চাষী নজরুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুই বিঘা জমিতে আলুর ফলন হয়েছে বেশ ভাল। বস্তা করা পর্যন্ত মোট খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমান বাজার মূল্য হিসেবে আলুর দাম ২৬ হাজার টাকা। এ অবস্থায় মোটা অংকের টাকা লোকসান দিচ্ছেন তিনি।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মধুপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ বলেন, প্রতিকেজি আলু উৎপাদনে তার খরচ হয়েছে ৭-৮ টাকা। অথচ সেই আলু বিক্রি করতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৪-৫ টাকা দরে। প্রতি কেজিতে ২-৩ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
জেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা জাহেরুল ইসলাম জানান, সদর উপজেলার নারগুন, বেগুনবাড়ি সহ কয়েকটি গ্রামে আগাম জাতের আলুর চাষ হয়েছে বেশ। কিন্তু বর্তমানে বাজারে দাম না থাকায় কৃষকরা তাদের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেনা। এভাবে চলতে থাকলে জেলায় কৃষকদের আলু চাষের উৎসাহ কমে যাবে।