ঢাকার আশুলিয়ায় রাত থেকে ঘিরে রাখা সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় র্যাবের অভিযানের মধ্যে ৪ জন আত্মসমর্পণ করেছেন।
এ বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক ফেলটেন্যান্ট কর্নেল মুফতি মাহমুদ খান বলছেন, টিনশেড ওই বাড়িতে ৪ জনের সবাই আত্মসমর্পণ করেছে।
শনিবার রাত ১টার দিকে র্যাব-৪ এর একটি দল নয়ারহাট এলাকার চৌরাবালি এলাকায় ইব্রাহীম নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ওই বাড়ি ঘিরে ফেলে।
রোববার সকালে র্যাবের স্পেশাল ফোর্স ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে চূড়ান্ত অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হয়।
সকাল ৯টার পর র্যাবের একটি এপিসি ওই বাড়ির কাছাকাছি যেতে দেখা যায়। আকাশে একটি হেলিকপ্টারও চক্কর দিতে দেখা যায়। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটানা বেশ কিছুক্ষণ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলির শব্দ আসে ওই বাড়ির দিক থেকে।
মুফতি মাহমুদ খান জানান, বেলা ১২টার দিকে ওই বাড়ি থেকে একজন বেরিয়ে এসে আত্মসমর্পণ করেন।
“সে জানায়, ভেতরে আরও তিনজন রয়েছে। কোনো নারী বা শিশু তাদের মধ্যে নেই। এর মিনিট দশেক পর একজন এবং বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আরও একজন বেরিয়ে এসে আত্মসমর্পণ করে।”
অভিযানের নেতৃত্বে থাকা র্যাব-৪ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি লুৎফুল কবীর বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে আমরা এই জঙ্গিদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালাচ্ছিলাম। এর ধারাবাহিকতায় তাদের এই আস্তানার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে রাতে বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়।”
তিনি জানান, অভিযান শুরুর পরপরই ভেতরে থাকা ‘জঙ্গিরা’ র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে কমপক্ষে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। রোববার সকাল ৬টার দিকে আবারও গুলি করে তারা। কয়েকটি বোমাও ছোড়া হয়। জবাবে র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়েন।
বাড়ির ভেতরে থাকা ‘জঙ্গিদের’ আত্মসম্পর্ণ করার আহ্বান জানিয়ে রাতে ও সকালে হ্যান্ডমাইকে বেশ কয়েকবার আহ্বান জানানো হলেও তখন তারা সাড়া দেয়নি। বরং র্যাব সদস্যদের ‘তাগুতির দল’ আখ্যায়িত করে বেশ কয়েকবার তারা গালিগালাজ করে বলে লুৎফুল কবীর জানান।
ওই বাড়ির মালিক ইব্রাহীমকে আটক করার পর তার বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজাদ নামের এক লোক গার্মেন্ট কর্মী পরিচয়ে দুই মাস আগে বাড়িটি ভাড়া নেন।
আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলের কাছে অবস্থান নিয়ে আছে। অ্যাডিশনাল এসপি পদমর্যাদার দুজন কর্মকর্তাও সেখানে পৌঁছেছেন। তবে র্যাব সদস্যরা সাংবাদিকসহ কাউকে ওই বাড়ির কাছাকাছি যেতে দিচ্ছেন না।
নিরাপত্তার স্বার্থে আশপাশের বাড়িগুলো থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে আশুলিয়া থানার ওসি আব্দুল আওয়াল জানিয়েছেন।