রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মরদেহ পুনঃময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তুলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সকাল সোয়া ৮টার দিকে তোলা হয় দিয়াজের মরদেহ। এরপর ২০ মিনিট ধরে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে সিআইডি। পরে দিয়াজের মরদেহবাহী গাড়ি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।
মরদেহ তোলার সময় উপস্থিত ছিলেন দিয়াজের মামা সাজেদ বিন হামিদ, সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি অহিদুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল রহমান সর্দার ও বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোসাদ্দেক হোসাইন।
তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিআইডির চট্টগ্রাম জোনের এএসপি অহিদুর রহমান বলেন, আমরা প্রাথমিক রিপোর্ট নিয়েছি। এখন ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য। সেখানে বিকেলের ভেতর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হবে। একইদিন রাত ১০টার মধ্যে পুনরায় দিয়াজের মরদেহ দাফন করা হবে।
দিয়াজের মামা সাজেদ বিন হামিদ বলেন, আমরা আশা করছি এবার নিরপেক্ষ প্রতিবেদন পাব। দিয়াজ কখনো আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে তদন্তের জন্য দিয়াজের মরদেহ তোলার আদেশ দেন। একইসঙ্গে তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধানকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ২০ নভেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানো অবস্থায় দিয়াজের মরদেহ পাওয়া যায়। রাত সাড়ে ১২টায় পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
২৩ নভেম্বর দিয়াজের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে দিয়াজের মৃত্যু আত্মহত্যাজনিত কারণে হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তবে দিয়াজের পরিবার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে তাকে হত্যা করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে।
২৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে’র আদালতে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
দিয়াজ হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মনসুর আলম, আবদুল মালেক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তোরাব পরশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আরমান, আপ্যায়ন সম্পাদক মিজানুর রহমান, উপ প্রচার সম্পাদক রাশেদুল আলম জিসান, সদস্য আরেফুল হক অপুর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ১০জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। আদালত সরাসরি মামলা গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দিয়ে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।