মালয়েশিয়ায় খুন হয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সৎ ভাই কিম জং-নাম। তাকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার টিভি চ্যানেল চোসুন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়েশিয়ার কর্মকর্তারা কিম জং-নামের মৃত্যুর কথা জানালেও বিষপ্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি তারা।
দক্ষিণ কোরীয় চ্যানেলটি বলছে, কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে তাকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে, বিবিসি জানায়, বিমানবন্দরেই হত্যার টার্গেট হন ৪৫ বছর বয়সী কিম জং-নাম।
মালয়েশিয়ার পুলিশ কিম জং-নামের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে। পুলিশ কর্মকর্তা ফাদজিল আহমাত বলেছেন, কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে সেটি এখনও নিশ্চিত নন তারা। তবে লাশ ময়না তদন্ত করে দেখা হবে।
রয়টার্সকে আহমাত বলেন, “খুনের ঘটনায় এখনও কাউকে সন্দেহ করা যায়নি। তবে তদন্ত চলছে এবং কয়েকটি সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তিনি জানান, কিম জং-নাম সোমবার ম্যাকাউ যাওয়ার পথে ছিলেন। কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনালে ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার ঝিমুনি বোধ হচ্ছিল। এ অবস্থায় তিনি কাউন্টারে গিয়ে সাহায্য চান। এ সময় তাকে বিমানবন্দরের ক্লিনিকে নেয়ার সময়ও তিনি খারাপ বোধ করছিলেন। ফলে তাকে হাসপাতালে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর পুর্তজায়া হাসপাতালে নেয়ার পথে এম্বুলেন্সেই মারা যান তিনি।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, কিম কে কুয়ালালামপুরে হত্যা করা হয়েছে। মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কিম জং-নাম উত্তর কোরিয়ার সাবেক নেতা কিম জং-ইলের বড় ছেলে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক টিভি চোসুনের খবরে বলা হয়, দুই নারী বিমানবন্দরে কিম জং-নামকে বিষ প্রয়োগ করেছেন। ওই দুই নারী উত্তর কোরিয়া চর বলে ধারণা করা হয়।
কিমের পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক ব্রিটিশ কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, মৃত্যুর ঘটনায় বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে।
এ আগে ২০১২ সালে উত্তর কোরিয়ার একজন গুপ্তচরকে কারাদণ্ড দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। ওই গুপ্তচরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কিম জং-নামকে গাড়ি চাপা দিয়ে মারার চেষ্টা করেছিলেন।
তারও আগে, ২০০১ সালে ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে জাপানে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় ধরা পড়েছিলেন কিম জং-নাম। তখন তিনি কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, তিনি টোকিওতে অবস্থিত ডিজনিল্যান্ডে যেতে চেয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর তিনি বাবা কিম জং-ইলের আস্থা হারান বলে ধারণা করা হয়।
কিম জং-নাম বেশিরভাগ সময় বিদেশে, বিশেষ করে ম্যাকাউ, সিঙ্গাপুর এবং চীনে কাটিয়েছেন।