রাজধানীর গুলশান-১ নম্বরের ডিসিসি মার্কেটে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। আগুনে ধসে গেছে ভবনের একাংশ।
আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট। সোমবার (২ জানুয়ারি) দিবাগত রাত আড়াইটায় ডিসিসি মার্কেটের কাঁচা বাজারে এ আগুনের সূত্রপাত হয় বলে খবর পাওয়া যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী বাবুল খান জানান, রাত আড়াইটায় ডিসিসি মার্কেট সংলগ্ন কাঁচা বাজারে আগুন লাগে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আগুনের তীব্রতায় ডিসিসি মার্কেটের একাংশ ধ্বসে পড়েছে। দাউ দাউ করে এ আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। আগুন ক্রমশ ডিসিসি মার্কেটের মসজিদের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে।
ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানা যায়, রাত আড়াইটায় এ আগুন লাগে। আগুন নেভাতে প্রথমে ৬টি ইউনিট যায়। আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় আরও ৬টি ইউনিট পাঠানো হয়। তবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। কোনো হতাহতেরও খবর পাওয়া যায়নি।
গুলশান থেকে প্রত্যক্ষদর্শী নাজিম উদ্দিন জানান, কাঁচা বাজারে আগুন লাগলেও এ আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো ডিসিসি মার্কেটে। ডিসিসি মার্কেটের স্বর্নের দোকান পর্যন্ত দোতলা ভবনের একাংশ ভেঙ্গে পড়ে যায়।
এদিকে আগুনের খবর পেয়ে শত শত মানুষ ভীড় করে গুলশানে। ডিসিসি মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও এ খবর পেয়ে ছুটে আসে।
ডিসিসি মার্কেটের ব্যবসায়ী মাসুদ বলেন, “কীভাবে এ আগুন লেগেছে কেউ বলতে পারবো না। তবে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত অন্তত ৫শ দোকান পুড়ে গেছে। আরও কতো পুড়বে, সেটা আল্লাহই জানেন।”
গভীর রাতে কর্মচারীদের কাছ থেকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ব্যবসায়ীরা ছুটে আসেন মার্কেটে। তাদের অনেককেই মরিয়া হয়ে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়। যাদের দোকান তখনও অক্ষত, তারা মালামাল নামিয়ে মার্কেটের সামনের খোলা অংশে জড়ো করতে থাকেন।
চোখের সামনে দোকান আর মার্কেট পুড়তে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন ব্যবসায়ীদের কয়েকজন। এ ঘটনা নাশকতা বলেও অভিযোগ করেন কেউ কেউ।
এক দোকান মালিক বলেন, মার্কেটের এক নিরাপত্তারক্ষীর কাছে রাত ২টায় তিনি আগুন লাগার খবর পান। ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ওই নিরাপত্তাকর্মী তাকে জানিয়েছেন।
দোকান মালিক সমিতির এক নেতাকে ফায়ার সার্ভিসের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায়। ভোর পৌনে ৫টার দিকে মার্কেটের একদল ব্যবসায়ী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের উপর চড়াও হলে তারা সরে যান। প্রায় ১৫ মিনিট পর পানি নিয়ে নতুন করে আগুন নেভাতে শুরু করেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, পানির স্বল্পতার কারণে তাদের বেড় পেতে হচ্ছে। পেছনের লেক থেকে পানি এনে কাজ চালাচ্ছেন তারা।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে মেয়র আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “স্বাভাবিকভাবে মনে হয় বিদ্যুতের আগুন। এতে দাহ্য পণ্য, খাবার, পারফিউম... কোনো জীবনহানি হয়েছে বলে আমাদের জানা নাই।”
মেয়র বলেন, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশের ভবন যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে চেষ্টাও তারা করছেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে কত সময় লাগবে তা বলা সম্ভাব হচ্ছে না।
এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল বলেন, “নাশকতা কিনা, এটা মেয়রের পক্ষে বলা সম্ভাব না, মেয়র নশকতা এক্সপার্ট না। পুলিশ ভালো বলতে পারবে। তবে মেয়র হিসেবে আমার মনে হয়, নাশকতা না হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ পারসেন্ট।”