জঙ্গিবাদী শক্তি যে গোপনে আরো বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেটি তারা ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলার মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি মনে করেন, এটি তাদের চক্রান্ত, যাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে বিএনপি।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটের সামনে আগামী ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভা সফল করার লক্ষ্যে প্রচারণার অংশ হিসেবে প্রচারপত্র (লিফলেট) বিতরণকালে এসব কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী বলেন, ‘জাফর ইকবালের ওপর হামলা করে জানিয়ে দিচ্ছে, এরা কিছুটা দুর্বল হলেও নিষ্ক্রিয় হয়নি। এরা এখন আন্ডারগ্রাউন্ডে সক্রিয় আছে, তারা আরো বড় ধরনের হামলার ভয়াবহ হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চক্রান্ত তাদের, যাদের বিএনপি পৃষ্ঠপোষকতা করে।’
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলার আগেও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মুক্তমনা লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা গতকালের হামলার মাধ্যমে তাদের অস্তিত্বের কথা জানান দিয়েছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার অশুভ ইঙ্গিত হিসেবে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ হামলা মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনার ওপর আঘাত হিসেবে উল্লেখ করে কাদের আরো বলেন, এ হামলার সঙ্গে জড়িত নেপথ্য ব্যক্তিদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে গাফিলতির কোনো সুযোগ নেই।
জাফর ইকবালের ওপর হামলার পর সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক বিষয়টি তদারক করছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে জাফর ইকবালকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়েছে।’
এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের একটি উৎসব ছিল। সেই উৎসবে অংশ নিয়ে অন্যদের সঙ্গে মুক্তমঞ্চে বসে ছিলেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এক যুবক হঠাৎ পেছন থেকে তাঁর মাথায় ছুরিকাঘাত করেন। এরপর তাঁকে নেওয়া হয় সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। রাতেই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা সিএমএইচে নিয়ে আসা হয়।