পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগেই তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে ভারত এবং বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী চুক্তি স্বাক্ষরের দিকে এগোচ্ছে। দিল্লি এবং ঢাকা সূত্রের খবর অনুযায়ী, পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে এই চুক্তির খসড়া প্রায় তৈরি। পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। তাঁর সঙ্গে কথা বলেই চুক্তির খসড়া পাকা করা হবে।
তিস্তা নিয়ে দু’দেশ যে অন্তর্বর্তী চুক্তির দিকে এগোচ্ছে, মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) আনোয়ার হোসেন সে বিষয়ে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে একটি প্রশ্ন পেশ হয়েছিল জাতীয় সংসদে। আনোয়ারের অনুপস্থিতিতে তাঁর জবাবটি পড়ে শোনান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম। তাতে বলা হয়েছে, "দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীদের নজরদারিতে তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তির খসড়া এক রকম চূড়ান্ত। চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে দু’দেশ আলোচনা চালাচ্ছে।"
দিল্লি সরকারি ভাবে এ বিষয়ে মুখে কুলুপ দিলেও খসড়া ‘এক রকম চূড়ান্ত’ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র। দিল্লির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময়েই ঠিক হয়, তিস্তার জল বণ্টন নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তি করা যেতে পারে। সেটির সুবিধা-অসুবিধা খতিয়ে দেখে পরে স্থায়ী চুক্তি করতে পারবে দুই দেশ। ওই সূত্রের কথায়, মমতাও এই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন। দিল্লির সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী, স্থলসীমান্ত চুক্তির মতো তিস্তা নিয়েও গোপনীয়তা রেখেই এগোনো হবে। ওই সূত্র আরো জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে একটা সমঝোতায় পৌঁছনো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও বর্তমান নরেন্দ্র মোদী এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় এটা দিল্লিরও বাধ্যবাধকতা। দিল্লি আশা করছে বিষয়টি মমতা বুঝবেন। তিস্তায় জলের সরবরাহ বাড়াতে কয়েকটি জলাধার নির্মাণে রাজ্যকে পর্যাপ্ত অর্থ দিতেও দিল্লি তৈরি। সুতরাং মমতার কাছ থেকে সদর্থক সাড়া মিলবে বলে আশাবাদী কেন্দ্র।
কেন্দ্রের এক মন্ত্রীর কথায়, "মমতা খুবই সংবেদনশীল নেত্রী। তাঁর জাতীয়তাবোধও প্রশ্নের ঊর্ধ্বে। আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টি তিনি রাজনীতির বাইরে রাখবেন।" তবে বাংলাদেশের মন্ত্রী যে ভাবে অন্তর্বর্তী চুক্তির বিষয়টি সংসদে প্রকাশ করে ফেলেছেন, তাতে কিছুটা উদ্বিগ্ন দিল্লি। হাসিনার উপদেষ্টা গওহর রিজভির কাছে তাঁরা জানতে চাইবেন, মন্ত্রীর এই গোপনীয়তা লঙ্ঘনে কি প্রধানমন্ত্রীর সায় ছিলো কিনা।
সূত্র: আনন্দবাজার