রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
ধর্মগুরুর প্রাসাদটির নাম 'বাবা কি গুহা'
প্রকাশ: ০৩:১০ pm ২৭-০৮-২০১৭ হালনাগাদ: ০৩:১৩ pm ২৭-০৮-২০১৭
 
 
 


প্রায় হাজার একর জমির মাঝখানে আয়নায় মোড়া এক প্রাসাদ। প্রাসাদটির নাম 'বাবা কি গুহা'। দামি আসবাব, সোফা, পর্দায় সাজানো বিলাসবহুল এই প্রাসাদেই বাস ধর্মগুরু রাম রহিম সিংহের। গুহায় তাকে ঘিরে থাকেন ২০০ জনেরও বেশি বাছাই করা নারী শিষ্য। তাদের চুল খোলা। পরনে সাধ্বীদের মতো দুধসাদা রঙের পোশাক। এরাই রাম রহিমের যত্নআত্তি, দেখভাল করেন। এমনই দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বাবা রাম রহিম। এক সময়ে বাবার গুহায় অতিথি হওয়া বিহারের সাংবাদিক পুষ্পরাজ জানিয়েছেন, সেখানে আছে মেয়েদের স্কুল 'পরীলোক'। সেখানকার সব পড়ুয়াই সুন্দরী। কারণ, বাবাজি মনে করেন 'খুব সুন্দরী' হলেই মেধাবী হয়। সেই গুহায় প্রবেশাধিকার আছে মাত্র কয়েক জনের। তাও আঙুলের ছাপ, চোখের মণি-র মতো বায়োমেট্রিক তথ্য মেলার পরই ভিতরে যাওয়ার অনুমতি পাওয়া যায়। ধর্মগুরু হলেও রাম রহিমের পছন্দ শিফনের রঙিন জামা এবং বাহারি জুতো। তার পোশাক তৈরির জন্য রয়েছে নিজস্ব ফ্যাশন ডিজাইনার। নিজস্ব 'হেয়ার স্টাইলিস্ট'ও রয়েছে। রাম রহিমের রয়েছে বিলাসবহুল ১০০টি গাড়ি। তার মধ্যে ১৬টি কালো রঙের ফোর্ড এনডেভার। বাবা প্রাসাদ থেকে বের হলে সব গাড়ি তাঁবু দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। তিনি নিজেই ঠিক করেন কোন গাড়িতে উঠবেন। আশ্রমে নিজের ব্যাটারিচালিত গাড়িতেই ঘোরেন তিনি। সিরসায় ডেরা সচ্চা সৌদার এই সদর দফতর শুধু একটি আশ্রম নয়। বলতে গেলে ছোটখাটো শহর। ডেরার ভিতরেই চাল, ডালসহ সকল প্রকার প্রয়োজনীয় জিনিসের চাষ হয়। হোটেল, সিনেমা হল, স্কুল, রেস্তোরাঁ, মাল্টি-স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, স্টুডিও, বায়োগ্যাস কারখানা, পেট্রোল পাম্প, সংবাদপত্রের ছাপাখানা সবই রয়েছে সেখানে। এক সঙ্গে ১০ হাজার জামাকাপড় কাচার ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়াশিং মেশিনও রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য রয়েছে কন্ট্রোল রুম, পুরো ডেরা জুড়ে নজরদারি ব্যবস্থা। ডেরার বাইরেও রাম রহিমের দাপট কম নয়। ডেরা সচ্চা সৌদা সিরসায় একটি নিজস্ব বাজার তৈরি করেছে। সিরসা ছাড়াও দেশেবিদেশে ৪৬টি আশ্রম রয়েছে রাম রহিমের। রাম রহিম নিজেকে 'মেসেঞ্জার অফ গড' বলে দাবি করেন। তাঁর 'এমএসজি' ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু-তেল-সাবানের মতো হাজারো সামগ্রীর ব্যবসাও চলে এই আশ্রম থেকেই। আশ্রমে রাম রহিমের প্রবচন শুনতে দিনে গড়ে ৩০ হাজার লোক জড়ো হয়। মাত্র ছ’মিনিট ভক্তদের উপদেশ দেন। তার পরেই মঞ্চে ডিজে উঠে গান বাজাতে শুরু করেন। মাত্র দু’সপ্তাহ আগেই সিরসার ডেরায় 'মিউজিক্যাল কার্নিভাল' এর আয়োজন হয়েছিল। ১২ অাগস্ট রাতের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ। মাঝরাতে মঞ্চে ওঠেন রাম রহিম। অদ্ভূতদর্শন লাল রঙের আলো ঝলমলে গাড়িতে। তার পর গান শোনাতে শুরু করেন। জলসা চলে রাত তিনটে পর্যন্ত। রাম রহিম অবশ্য শ’খানেক কনসার্ট করেছেন। তিনি ১৫ অাগস্টে ৫০ বছরে পা দিলেন। সেদিন ৩ ইঞ্চি মোটা, ৪২৭.২৫ বর্গফুটের কেক তৈরি হয়েছিল। তার উপরে একসঙ্গে দেড় লক্ষ মোমবাতি জ্বালানো হয়েছিল। অবশ্য ধর্মগুরু রাম রহিম সংসারী। স্ত্রী হরজিত কৌর এবং তার এক পুত্র ও দুই কন্যাও রয়েছেন। এ ছাড়াও একটি কন্যা দত্তক নিয়েছেন তিনি। মেয়েরা তাঁর সিনেমায় অভিনয়ও করেছেন। ছেলে জসমিতের বিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা হরমেন্দ্র সিংহ জস্সির কন্যার সঙ্গে। বড় মেয়ে চরণপ্রীতের দুই ছেলে রয়েছে। রাম রহিম আদর করে নাতিদের নাম দিয়েছেন, সুইটলাক ও সুবাহ-এ-দিল। সূত্র: আনন্দবাজার

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT