শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
নতুন সিইসি সাবেক সচিব কেএম নূরুল হুদা
প্রকাশ: ০৮:৩০ pm ০৬-০২-২০১৭ হালনাগাদ: ০৯:৪০ am ০৭-০২-২০১৭
 
 
 


সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

বাকি চার কমিশনার হিসেবে রয়েছেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, রাজশাহীর অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম কবিতা খানম, সাবেক সচিব মো. রফিকুল ইসলাম ও ব্রি. জে. (অব.) শাহাদৎ হোসেন।

সার্চ কমিটির কাছে ১০ জনের তালিকা থেকে সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাষ্ট্রপতি হামিদ তাদের নিয়োগে অনুমোদন করেছেন।
 
রাত সাড়ে ৯টার দিকে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সংবাদ সম্মেলনে সিইসি ও কমিশনারদের নাম ঘোষণা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সাক্ষর শেষে কার্যক্রম চূড়ান্ত করা হয়েছে। এরপরই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
 
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ১৯৭৩ ব্যাচের মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচের কর্মকর্তা (সদস্য) ছিলেন নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তারা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাননি, এর আগেই ওনাদের অবসর দেওয়া হয়। পরে সুপ্রিম কোর্ট ওনাদের সচিব মর্যাদা দেন।
 
প্রধান নির্বাচন কমিশনারে বাড়ি পটুয়াখালী জেলায়।
 
ইসি গঠনের চূড়ান্ত নামগুলো কোন দলের কাছ থেকে এসেছে, জানতে চাইলে শফিউল আলম বলেন, নামগুলো প্রায় কমন। ১২৮টি নামের মধ্যে এ নামগুলো এসেছে। নামগুলো বড় বড় সব দলের মধ্য থেকে এসেছে। একটি দল নির্দিষ্ট সময়ের পরে নাম দিয়েছিল।
 
তিনি আরও বলেন, একই নাম অনেকগুলো দলের কাছ থেকে এসেছে। বিএনপির দেওয়ার নামের মধ্যে মাহবুব তালুকদার ও তোফায়েল আহমেদের নাম ছিল। আওয়ামী লীগের নামগুলোর মধ্যে ছিল বেগম কবিতা খানম ও আবদুল মান্নানের নাম।
 
তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নামটি কোন দল থেকে এসেছে তা তাৎক্ষণিকভাবে মনে পড়েনি বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
 
নামগুলো নিয়ে বিতর্ক থাকবে না- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আশা কর, এখানে বড় বড় সব দলের নাম আছে। তবে দলগুলো নামগুলো দিলেও তা নির্দলীয় বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
 
তিনি বলেন, সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদার ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদারকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নাম সুপারিশ করেছিল সার্চ কমিটি।
 
আরও চারজনকে কমিশনার হিসেবে সুপারিশ করা হয়েছিল।
 
তারা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. জারিনা রহমান, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ,পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য মো. আবদুল মান্নান এবং জানিপপ চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ।
 
সার্চ কমিটি স্বাধীনভাবে কাজ করেছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যখন যা চেয়েছে আমরা সাচিবিক সহায়তা দিয়েছি।
 
সাংবাদিকদেরও ধন্যবাদ জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, আমি আপনাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই এজন্য যে, আপনারা এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে আগাগোড়াই জড়িত ছিলেন এবং উৎসাহ যুগিয়েছেন। ‘জনগণকে যা যা জানানোর বিষয় ছিল তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়েছেন এবং ব্যাপকভাবে জনমত তৈরিতে অংশগ্রহণ করেছেন, আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।’

সার্চ কমিটি সোমবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে শেষ বৈঠক করে। বৈঠকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে নাম জমা দেয়। ইসি গঠনে সার্চ কমিটির ১০ নাম থেকে এই পাঁচটি নাম চূড়ান্ত করা হলো।
 
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সার্চ কমিটি বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে ১০টি নাম জমা দেয়। সোয়া ৭টায় বঙ্গভবন থেকে বের হন সার্চ কমিটির সদস্যরা এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
 
বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, রাত ৯টায় সচিবালয়ে ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।
 
তারও আগে, বিকেল ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে শুরু হওয়া সার্চ কমিটির বৈঠকের পর সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে বেরিয়ে অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল ওয়াদুদ সাংবাদিকদের বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত নামগুলো গেজেট আকারে প্রকাশ করা হতে পারে।
 
জাজেস লাউঞ্জে বৈঠক করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সার্চ কমিটির সদস্য সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক সাংবাদিকদের বলেন, কমিটি ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করেছে। যা প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
 
সে সময় বিভিন্ন অসমর্থিত সূত্র থেকে জানা যায়, ইসির প্রধান হিসেবে দু’জনের নাম এসেছে সংক্ষিপ্ত তালিকায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে সার্চ কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার ও সাবেক সচিব নূরুল হুদার নাম চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে সার্চ কমিটি।
 
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো সার্চ কমিটির কাছে যে নাম প্রস্তাব করেছে সেখান থেকে নাম রাখা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ওই সময় বলেন, এটা স্পেসিফিক্যালি বলা যাচ্ছে না। তবে রাজনৈতিক দলগুলো যেসব নাম দিয়েছে আমার মনে হয় ওর মধ্যেই সুপারিশ করা হয়েছে।
 
গত ২ ফেব্রুয়ারি সার্চ কমিটির বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া ব্যক্তিদের নাম থেকে ২০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা করে তাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করা হয়। তারা বিশিষ্টজনদের মতামতও নিয়েছিল।
 
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন গঠনে সুপারিশ করার জন্য গত ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি একটি অনুসন্ধান কমিটি বা সার্চ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন।
 
ওই দিন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। এতে ছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মাসুদ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য শিরীণ আখতার।
 
গঠিত কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নাম সুপারিশ করতে বলা হয়েছিল।
 
আর কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির মেয়াদ ৮ ফেব্রুয়ারিই শেষ হচ্ছে। অবশ্য একজন কমিশনার একেএম শাহনেওয়াজের মেয়াদ শেষ হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT