গতকাল শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার টানা তুষারপাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এ পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কোনো কোনো অঙ্গরাজ্যে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসতে পারে বলে আবহাওয়া বিভাগ সতর্ক করে দিয়েছে।
দক্ষিণের অঙ্গরাজ্য আলাবামা থেকে উত্তর-পূর্বের নিউইয়র্ক নগরী পর্যন্ত বিরামহীন তুষারপাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনপদের পর জনপদ। অনেক মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। নর্থ ক্যারোলাইনার ২৫ হাজার বাসিন্দাসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে। তুষারকবলিত অঙ্গরাজ্যগুলোতে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নিচে নেমে এসেছে। সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন এবং তুষার পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত প্রশাসনের বিশেষ দলগুলো কাজ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রায় ৭৫ লাখ মানুষ তুষারের কবলে পড়েছে। পিচ্ছিল সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে চালকেরা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছেন না। এক গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খাচ্ছে অন্য গাড়ি। আবার ধীরগতিতে গাড়ি চলায় মহাসড়কগুলোতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় চার হাজার ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন বিমানবন্দরে শত শত যাত্রী আটকা পড়েছে।
জর্জিয়া, কেনটাকি, মেইন ও ওরেগনে এক শিশুসহ মোট পাঁচজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে এনবিসি নিউজ। কানেটিকাটের আন্ত-অঙ্গরাজ্য মহাসড়ক তুষারপাতের কারণে পিচ্ছিল হয়ে গেলে ২১টি যানবাহন একটি আরেকটির ওপর উঠে গেছে। ফলে, ওই মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নর্থ ক্যারোলাইনা, ভার্জিনিয়া, বাল্টিমোর, নিউইয়র্ক ও নিউজার্সির উপকূলীয় এলাকায় বরফের স্তূপ দুই ফুট পর্যন্ত পৌঁছেছে। সড়কের গাড়ি এবং বাড়িঘরের আঙিনা ঢাকা পড়েছে বরফের নিচে। তুষারকবলিত অঙ্গরাজ্যগুলোতে আবহাওয়াজনিত সতর্ক অবস্থা জারি করা হয়েছে। নেহাত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে ঘণ্টায় ঘণ্টায়।
এদিকে গতকাল সপ্তাহান্তের ছুটি থাকায় বাসাবাড়িতে অলস সময় কাটিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি-অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি ততটা নাজুক নয়। তবে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।
আবহাওয়াজনিত সতর্কতার মধ্যেই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রেখেছি। সারা দিনে মাত্র পাঁচজন ক্রেতার দেখা মিলেছে। ক্যাসিনোতে লোকজন নেই, এ জন্য দাঁড়িয়ে বসে সময় পার করতে হচ্ছে।