বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রে মোবাইল ফোনে কথা তারপর বন্ধুসহ ধর্ষণ
প্রকাশ: ০৯:৩১ am ০৩-০৮-২০১৭ হালনাগাদ: ০৯:৩৪ am ০৩-০৮-২০১৭
 
 
 


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রে মোবাইল ফোনে কথা হতো প্রায়ই। এভাবেই কেটে গেছে চার বছর। চার বছরের কথাবার্তায় ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পাস করা এক নারী (২৫) পুরোপুরি বিশ্বাস করে বসেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শ্রীপুর বামনগর ডিগ্রি কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক শামসুল আলম বাদশাকে। তারা আবদ্ধ হয়ে পড়েন বন্ধুত্বের বন্ধনে। সেই বন্ধন আর বিশ্বাসের ওপর ভরসা করে ওই নারী গত সোমবার সকালে চিকিত্সার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে ফোন করেন বাদশাকে। কলেজ শিক্ষক বাদশা সুকৌশলে ওই নারীকে এক গেস্টহাউসে নিয়ে গিয়ে বন্ধুসহ ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় পুলিশ প্রভাষক শামসুল আলম বাদশা (৩০) ও তার বন্ধু আবু ফায়েজ নাহিদকে (২৬) গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। আজ তাদের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানাবে পুলিশ। গতকাল সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ধর্ষিত ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে চিকিত্সকের বরাত দিয়ে জানান শাহ মখদুম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন তুহিন। বিকেলে রাজশাহী মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে জবানবন্দি দেন ধর্ষণের শিকার ওই নারী। এ সময় নিজ জিম্মায় যাওয়ার আবেদন করলে প্রাপ্তবয়স্ক বিবেচনায় আদালত তাকে নিজ জিম্মায় বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেন। শাহ মখদুম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন তুহিন জানান, গতকাল সকালে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে ওই নারীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হয়। তিনি জানান, ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার শামসুল আলম বাদশা ও আবু ফায়েজ নাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হবে। তাদের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। শাহ মখদুম থানার ওসি জিল্লুর রহমান জানান, ওই নারী রাজধানীর একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ পাস করে চাকরির চেষ্টা করছিলেন। আর ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার শামসুল আলম বাদশার বাড়ি বাগমারা উপজেলার মচমইলে। সে ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সের (ইউআইটিএস) রাজশাহী শাখার সাবেক শিক্ষক এবং বর্তমানে বাগমারার শ্রীপুর বামনগর ডিগ্রি কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক। তার পিতার নাম আবদুল হালিম। বাদশার বন্ধু আবু ফায়েজ নাহিদ নগরীর গোরহাঙ্গা এলাকার ইজিটাচ কম্পিউটার দোকানের মালিক। তার বাড়ি বাগমারা উপজেলার হাসনিপুর গ্রামে। তবে তারা দুজনেই রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার সাগরপাড়া এলাকায় বসবাস করে। শাহ মখদুম থানার ওসি জানান, চিকিত্সার জন্য গত ৩১ জুলাই সকালে ট্রেনযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীতে আসেন ওই নারী। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিত্সা শেষে দুপুরে তিনি ফোন করেন তার ফেসবুক বন্ধু বাদশাকে। বাদশা তাকে ডেকে নেয় নগরীর গোরহাঙ্গা এলাকায় তার বন্ধুর ইজিটাচ কম্পিউটারের দোকানে। সেখানে বাদশা তার ফেসবুক বান্ধবীকে নাহিদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। এরপর দুপুরে খাবারের কথা বলে তারা ওই নারীকে নিয়ে যায় শাহ মখদুম থানার নওদাপাড়া এলাকার গ্রিন গার্ডেন নামে একটি বাগান বাড়িতে (গেস্ট হাউস)। গেস্ট হাউসের দোতলার একটি রুমে তারা অবস্থান করে। দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর নাহিদ রুম থেকে বের হয়ে যায়। এ সময় বাদশা ওই নারীকে ধর্ষণ করে ঘরের বাইরে যায়। কিছুক্ষণ পর নাহিদ সেই রুমে ঢুকে ওই নারীকে ধর্ষণ করে। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে গেস্ট হাউসে ফেলে রেখে বাদশা ও নাহিদ চলে যায়। এরপর গেস্ট হাউসের কর্মচারীদের সহযোগিতায় রাত ৮টার দিকে ওই নারী শাহ মখদুম থানায় গিয়ে পুলিশকে ঘটনা জানান। পরে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করে রাতেই ধর্ষকদের ধরতে অভিযান শুরু করে পুলিশ। ওসি জানান, মামলার পর রাতেই ওই নারীর মাধ্যমে প্রথমে নাহিদকে কৌশলে নগরীর আমচত্বর এলাকায় ডাকা হয়। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বাদশাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT