বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার রেশ না কাটতেই রাজধানীর বনানীতে ‘জন্মদিনের দাওয়াতে’ ডেকে নিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগে গতকাল বুধবার ওই তরুণী বনানী থানায় বাহাউদ্দিন ইভান নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
বনানী থানার পুলিশ বলেছে, বাহাউদ্দিন সপরিবারে বনানীর ন্যাম ভিলেজের একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন। তাঁর বাবা ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার রাতে বাহাউদ্দিন তাঁর জন্মদিনে দাওয়াতের কথা বলে পূর্বপরিচিত ও অভিনেত্রী এক তরুণীকে (২১) বাসায় ডাকেন। রাত দেড়টার দিকে তিনি ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। তখন বাসায় বাহাউদ্দিন ছাড়া কেউ ছিলেন না। রাত সাড়ে তিনটার দিকে বাহাউদ্দিন তাঁকে বাসা থেকে বের করে দেন। এরপর তরুণী বনানী থানায় যান। গতকাল বুধবার সকালে তিনি বাহাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।
বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মতিন গত রাতে বলেন, ঘটনার পর বাহাউদ্দিন পালিয়ে গেছেন। তাঁর বাবার ব্যবসা দেখাশোনার পাশাপাশি নিজেও ব্যবসা করেন। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। মামলার পর তরুণীকে তেজগাঁওয়ের উইমেন ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। গতকাল রাতে তাঁকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসক না থাকায় রাতে তাঁকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরিদর্শক আবদুল মতিন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ওই তরুণীর সঙ্গে বাহাউদ্দিনের প্রথম পরিচয় হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে তাঁদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ হয়। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বনানীর বাসায় যেতে তরুণীকে অনুরোধ করেন তিনি। কিন্তু তরুণীটি ওই বাসায় গিয়ে বাহাউদ্দিন ছাড়া অন্য কাউকে দেখতে পাননি। মঙ্গলবার রাতে বাহাউদ্দিনের স্ত্রী, মা-বাবা না থাকলেও গতকাল সকালে তাঁরা বাসায় আসেন।
এর আগে গত ২৮ মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের দাওয়াতে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদ, শাফাতের বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে আবদুল হালিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অপর তিন আসামি হলেন শাফাতের বন্ধু সাদমান সাকিফ, গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী ওরফে আজাদ। শাফাতসহ সব আসামি বর্তমানে কারাগারে আছেন। এ মামলায় ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।