বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে নাম আসা ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে দুদকের কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি নিয়ে গত ২২শে নভেম্বর থেকে চলা জিজ্ঞাসাবাদে বাচ্চুর দুই মেয়াদে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক ১০ সদস্যকেও ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গতকাল ব্যাংকের সাবেক পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম ও আনিস আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর আগে কামরুন নাহার আহমেদ, অধ্যাপক কাজী আকতার হোসাইন, সাখাওয়াত হোসেন, ফখরুল ইসলাম, একেএম কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম, শ্যাম সুন্দর শিকদার ও একেএম রেজাউর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। তাদেরকে আলাদা চিঠি দিয়ে দুদকে তলব করা হয়েছিল। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলার চার্জশিট আদালতে পেশ করা হবে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে মোট সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। ঋণপত্র যাচাই না করে জামানত ছাড়া, জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দানসহ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বিধি বহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে। এরপর দুদক বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে । প্রায় চার বছর অনুসন্ধান শেষে এই অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় গত বছর রাজধানীর তিনটি থানায় ১৫৬ জনকে আসামি করে ৫৬টি মামলা করে দুদক। আসামিদের মধ্যে ২৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তা এবং বাকিরা ঋণগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক জরিপ প্রতিষ্ঠানে যুক্ত। তবে আসামির তালিকায় বাচ্চু বা ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের কেউ না থাকায় দুদকের ওই তদন্ত নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। এ বিষয়ে দুদকের বক্তব্য ছিল, ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা তারা পায়নি । তাই তার নাম আসামির তালিকায় রাখা হয়নি। অথচ ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত দুই মেয়াদে ছয় বছর রাষ্ট্রায়ত্ত ওই ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন শেখ আবদুল হাই বাচ্চু। আর ওই সময়টাই এ বড় ধরনের ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। কিন্তু চলতি বছরের আগস্ট মাসে এক মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের আসামি না করায় উম্মা প্রকাশ করেন।