ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ সোমবার (১৭ জুলাই)। রাজ্যের মোট ২৯৪ জন বিধায়ক। তার মধ্যে ২৮৮ জনই এক দিকে। অন্য দিকে ৬ জন। রাজ্য বিধানসভার এই সমীকরণ সামনে রেখেই স্থানীয় সময় সকাল ১০ টায় শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দুই প্রার্থীই পিছিয়ে থাকা 'দলিত' সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। এনডিএ প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ বনাম বিরোধীদের প্রার্থী মীরা কুমার। সোমবার ভোট গ্রহণ করা হলেও গণনা করা হবে বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই)। নির্বাচিত নতুন রাষ্ট্রপতি আগামী ২৫ জুলাই শপথ গ্রহণ করবেন। সাধারণ নির্বাচনের চাইতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পন্থা একটু ভিন্ন। সাধারণ নির্বাচনে একটি ভোটের মূল্য এক। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটের মূল্য এক জটিল পদ্ধতিতে নির্ধারণ করা হয়। রাষ্ট্রপতি পদে এনডিএ-র প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দের বাক্সে এ রাজ্য থেকে পড়ার কথা ২৩২২টি ভোট। বাংলার একজন বিধায়কের ভোটমূল্য ১৫১। সাংসদদের ক্ষেত্রে সারা দেশেই যা ৭০৮। বিজেপির তিন বিধায়ক, লোকসভার দুই সাংসদ এবং সঙ্গে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তিন জন বিধায়ককে ধরলে কোবিন্দের ভোট এ রাজ্য থেকে গোনাগুনতি। অপরদিকে বিরোধী জোটের প্রার্থী মীরা কুমারের পক্ষে রয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বামফ্রন্ট। সহজ অঙ্কে কোবিন্দের তুলনায় মীরা পিছিয়ে থাকলেও এ রাজ্যে অন্তত তাঁর পাল্লাই ভারী। কিন্তু এই সহজ ভাগাভাগির মধ্যেই ঈষৎ আলোড়ন তৈরি হয়ে রয়েছে ‘ক্রস ভোটিং’-এর জল্পনায়। বিজেপি শিবিরের একাংশের দাবি, এ রাজ্য থেকে কিছু বাড়তি ভোট কোবিন্দ পেতে পারেন। নানা কেলেঙ্কারিতে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের মুখে থাকা জনাকয়েক জনপ্রতিনিধি বিজেপি-কে ‘বার্তা’ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি পদে নরেন্দ্র মোদীর প্রার্থীকে ভোট দিতে চান বলে ওই শিবিরের দাবি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন যে হেতু গোপন ব্যালটে হয়, তাই কে কোন দিকে ভোট দিলেন, তা জানার উপায় নেই। তাই এমন জল্পনার কিছু অবকাশ অন্তত খাতায়-কলমে থাকছে। যদিও অন্য কোনো দলের কোনো সূত্র থেকেই ওই দাবির কোনো সমর্থন মিলছে না। বরং, বিজেপিরই কেউ কেউ আবার পাল্টা বলছেন, তৃণমূলের সমর্থন ছাড়াই কোবিন্দের জয় তো নিশ্চিত! নির্বাচন কমিশন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মোট ৫৫ জন সাংসদ বিভিন্ন বিধানসভায় ভোট দিতে চেয়ে আবেদন করেছেন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই তৃণমূলের। ভোটদানের ফাঁকেই আজ বিধানসভায় দলীয় সাংসদদের নিয়ে বৈঠক করার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সংসদ অধিবেশনের রণকৌশলই বৈঠকের আলোচ্য। তবে ভোট-পর্ব শুরুর এক ঘণ্টা আগেই সাংসদ এবং বিধায়কদের বিধানসভায় ডেকে নিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, অন্য রকম কোনও আশঙ্কা বিনাশ করতেই কি এমন তৎপরতা? তবে দলিত বনাম দলিতের লড়াইয়ে কে জয়ী হচ্ছে তা এখন মুখ্য বিষয়। কে. আর. নারায়ণনের পর এবার সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হবেন দ্বিতীয় কোনো দলিত রাষ্ট্রপতি। সূত্র: আনন্দবাজার, কলকাতা ২৪*৭