সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে গ্রিক দেবীর আদলে স্থাপিত ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে শুক্রবার বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সকালে তারা ভাস্কর্য পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়ে মিছিল করেন। পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় সাতজন আহত হন। পরে পুলিশ তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে।
ধাওয়া পাল্টাধাওয়ায় ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী তামান্না বিনতে কথা (১৭), উদীচীর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জমশেদ আনোয়ার তপন (৪৫), ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী মৃদুল (২৩), অনিক তাসলিম মিতু (২২), সাজ্জাদ হোসেন (১৮), সঞ্জয় কান্তি দাস (২৭) এবং ৫৫ বছরের অজ্ঞাত এক নারী পথচারী আহত হন।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আহতদের মধ্যে সঞ্জয় কান্তি দাসের ডান পায়ে গুলি লেগেছে। অন্যরা পুলিশের ছোঁড়া কাঁদাসে গ্যাসে আহত হয়েছেন।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট এবং ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে হাইকোর্টের মাজার গেটের দিকে এগোতে থাকেন। এ সময় পুলিশ বাধা দেয়। তবে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বিক্ষোভকারীরা এগোতে চাইলে পুলিশ জল কামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বাধার মুখে বিক্ষোভকারীরা হাইকোর্টের মাজার গেটের দিকে যেতে না পেরে সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এদিকে ঢাবির ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী ব্যারিকেড ভেঙে ফেলায় পুলিশ তাকেসহ দুজনকে আটক করে। অবশ্য কিছুক্ষণ পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
লিটন নন্দী বলেন, ‘ভাস্কর্যটি কোনোভাবেই সরানো ঠিক হয়নি। এটি যেমন ন্যায়বিচারের প্রতীক তেমনি দেশের সংস্কৃতিকে বহন করেছে। অথচ রাতের আঁধারে সেটি সরিয়ে ফেলা হলো। এর প্রতিবাদ করতে এসে পুলিশের বাধার মুখোমুখি হচ্ছি।’
রমনা জোনের পুলিশের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদেরকে সরে যেতে বলা হয়। কিন্তু তারা না সরে রাস্তা অবরোধ করে। এতে যান চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে। এ কারণে ছাত্রদের সরাতে জলকামান ব্যবহার করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দলের অব্যাহত দাবির মুখে বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে ভাস্কর্যটি সরানো হয়। ভাস্কর্যটির নির্মাতা ভাস্কর মৃণাল হক ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে এটি যত্ম করে সরানোর কাজ তত্ত্বাবধান করেন। এ সময় সুপ্রিম কোর্ট চত্বর ও এর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।