নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (এনসিসি) নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, “প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা ছিল বলেই কোনো রকম সহিংসতা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্ভব হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৫টায় শেরে বাংলানগরে অবস্থিত নির্বাচন কমিশনের মিডিয়া সেন্টারে এনসিসি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এসময় নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
সিইসি বলেন, “প্রত্যেক ভোটার যাতে তাদের ভোটাধিকার সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারেন, সেজন্য এনসিসিতে ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনী আচরণবিধি যাতে পালন হয় সেজন্য ২৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে কোনো অপরাধ যাতে না হয় পর্যাপ্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ করা হয়। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরাও তারপরে নারায়ণগঞ্জে উপস্থিত হয়ে প্রতিন্দ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের বক্তব্য শুনি। তারা আমাদেরকে সহযোগিতা করার কথা দেন।”
‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ও ভোটগ্রহণের পেছনে বিশেষ কী ভূমিকা নেয়া হয়েছে’ এমন প্রশ্নের উত্তরে কাজী রকিব বলেন, “প্রতিবারই আমরা একই রকম উদ্যোগ নেই। জায়গাটা ছোট ছিল। প্রার্থীরাও সহযোগিতা করেছে। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা সহযোগিতা করলেই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এ নির্বাচন সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেছি। আল্লাহর অসীম রহম, কোনো অশান্তি হয়নি। কেউ নিহত, আহত হননি। প্রার্থীরাও সবাই বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই। আচরণবিধি ভঙ্গ করবো না। আমি তাদের বলেছিলাম, সিটি নির্বাচনে আপনারা ঐতিহ্য স্থাপন করুন। জনগণ যাকে ভোট দেবে তিনিই জিতবেন। জনগণের রায় মেনে নিলেই হবে। সব মিলিয়ে এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে।”
সিইসি বলেন, “ভোট গ্রহণের আগের দুইদিন, ভোটের দিন ও পরের একদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। এনসিসি নির্বাচন উপলক্ষে সাড়ে ৯ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ইসির নয়জন কর্মকর্তাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে প্রতিটি ওয়ার্ডে মোতায়েন করা হয়। আচরণবিধি ভঙ্গে আজও তিনজনকে আট হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কমিশন থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়েছে।”
এ নির্বাচন কমিশনের মেয়াদে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের পরে কেবল জেলা পরিষদ নির্বাচন বাকি রয়েছে। অতীতের সব নির্বাচনের তুলনায় এনসিসি নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে প্রার্থী, ভোটার ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বলেছেন। তাদের মতে, অতীতের নির্বাচনগুলো এমন হলে এ কমিশন নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকতো না।”
এনসিসি নির্বাচনকে ঘিরে ভোট গ্রহণের আগে ও পরে কোনো মারামারি, সংঘর্ষ, হতাহত, কেন্দ্র দখল ও কারচুপির অভিযোগ পাওয়া যায়নি। প্রধান দুইদল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরাও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।