আইএস সম্পৃক্ততার সন্দেহে দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়া পুলিশ।
রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে গত বৃহস্পতিবার তাদের আটক করা হয় বলে দেশটির সংবাদপত্র নিউ স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে।
এই দুই বাংলাদেশির নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। তাদের দুজনেরই বয়স ২৭-২৮ বছর। তারা বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন।
গ্রেপ্তার অন্য দুজনের একজন ফিলিপিন্সের নাগরিক; অন্যজন মালয়েশিয়ারই এক নারী। তাদের গত ১৩ জানুয়ারি পূর্বাঞ্চলীয় সাবাহ প্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ফিলিপিন্সের ওই নাগরিক আইএসের হয়ে জঙ্গি সংগ্রহের কাজ করছিলেন বলে জানান মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান খালিদ আবু বকর।
ওই চারজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়ে তিনি সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, “ফিলিপিন্সের ওই ব্যক্তি মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে আইএসে জঙ্গি ভেড়াতে সাবাহ প্রদেশকে ট্রানজিট পয়েন্ট বানানোর পরিকল্পনা করছিলেন।”
বাংলাদেশি ওই দুই বিক্রয়কর্মী ওই ফিলিপিনোর প্ররোচনায় পড়ে আইএসে ভিড়তে উৎসাহী হন বলে মালয়েশীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা। ওই ফিলিপিনো ঘড়ি বিক্রি করতেন।
বাংলাদেশে আইএস সমর্থকদের সঙ্গে গ্রেপ্তার দুই বাংলাদেশির যোগাযোগ ছিল বলে সন্দেহ করছেন মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান খালিদ।
বাংলাদেশে আইএসের কোনো সাংগঠনিক তৎপরতার কথা সরকারের পক্ষ থেকে নাকচ করা হচ্ছে। তবে দেশীয় জঙ্গি গোষ্ঠীর কোনো কোনোটি মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক দলটির সমর্থক বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন।
ঢাকায় গত বছর ঝড়তোলা গুলশান হামলায় জড়িত একজন নিবরাজ ইসলাম মালয়েশিয়ায় পড়তেন এক সময়। এছাড়া মালয়েশিয়ায় গিয়ে বাংলাদেশিদের জঙ্গি কার্যক্রমে প্ররোচিত হওয়ার ঘটনাও প্রকাশ হয়েছে এর আগে।
মালয়েশিয়ার যে নারী গ্রেপ্তার হয়েছেন, তিনি ফিলিপিন্সের ওই নাগরিককে বিয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন বলে কর্মকর্তারা জানান।
তারা বলেন, ফিলিপিন্সে মালয়েশিয়ার সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ড. মাহমুদ আহমদের নেতৃত্বে আইএসের একটি সেল সক্রিয়। গ্রেপ্তার ফিলিপিনো ওই মাহমুদ আহমদের হয়ে কাজ করতেন। তার দায়িত্ব ছিল ফিলিপিন্সের মিন্দানাওয়ে জঙ্গি পাঠানো।
আইএসের ফিলিপিনো ওই সেলটি সম্প্রতি সেদেশের মুসলিম বিদ্রোহী দল আবু সাহাফের সঙ্গে একীভূত হয়েছে বলে নিউ স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়।
গত বছরের জানুয়ারিতে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সন্ত্রাসী হামলার পর মালয়েশিয়া পুলিশ জঙ্গিদের ধরতে নজরদারি চালাতে থাকে। তার ধারাবাহিকতায় এই চারজন ধরা পড়লেন।
আইএস সম্পৃক্ততার সন্দেহে ২০১৩ থেকে এই পর্যন্ত আড়াইশর বেশি ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মুসলিম প্রধান এই দেশটিতে।