মিশরে মধ্যাঞ্চলে কপটিক খ্রিস্টানদের বহনকারী একটি বাসে বন্দুকধারীরা গুলি চালিয়ে অন্তত ২৮ জনকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
মুখোশ পরা বন্দুকধারীরা খ্রিস্টানদের থামিয়ে তাদেরকে গুলি করে বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ হামলায় আরও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে।
গত কয়েক মাসে মিশরে কপটিক খ্রিস্টানদের উপর বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেগুলোর দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
এর আগে ৯ এপ্রিল তান্তা ও আলেকজান্দ্রিয়ায় চার্চ লক্ষ্য করে দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়।শুক্রবারের হামলার পর মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন। জিহাদিদের মোকাবেলায় যা কিছু প্রয়োজন তা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
‘কপটিক অর্থডক্স চার্চ’ মিশরে খ্রিস্টানদের প্রধান গির্জা। কপটসরা বেশিরভাগ মিশরের অধিবাসী হলেও দেশের বাইরে গির্জার প্রায় ১০ লাখ সদস্য রয়েছে।
খ্রিস্টীয় ৫০ সালে সম্রাট নিরোর শাসনামলে অ্যাপোস্টল মার্ক মিশর সফরে এসে আলেকজান্দ্রিয়ায় ‘চার্চ অব আলেকজান্দ্রিয়া’প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকেই কপটিক ধারার যাত্রা শুরু বলে অনুসারীদের বিশ্বাস।কপটিক গির্জার নিজস্ব গির্জাপিতা বা পোপ রয়েছে, যারা সেইন্ট মার্কের উত্তরসূরী হিসেবে বিবেচিত হন। পবিত্র ভূমির বাইরে এরাই সবচেয়ে প্রাচীন খ্রিস্টান গোষ্ঠী।
যিশু খ্রিস্টের মানবিক ও ঐশ্বরিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে ৪৫১ খ্রিস্টাব্দে কাউন্সিল অব চ্যালসেডনে অন্য খ্রিস্টীয় মূল্যবোধের সঙ্গে এই চার্চের বিচ্ছেদ ঘটে।রোমান সাম্রাজ্যে এই চার্চকেন্দ্রীক খ্রিস্টানরা নিধনের শিকার হয়েছিল। মিশর মুসলিম দেশ হওয়ার পরও তা চালু থাকে, যা এখনো চলছে বলে অনেকে মনে করেন।