মেক্সিকোয় আবারো শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে। দেশটির মধ্যাঞ্চলের এ ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশটির রাজধানী মেক্সিকো সিটির বহু ভবন গুঁড়িয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছে অনেক মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে ব্যাপকভিত্তিক উদ্ধারাভিযান চলছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার এ ভূমিকম্প হয়। দেশটির মরেলস, পুয়েবলা ও মেক্সিকো স্টেট রাজ্য এবং রাজধানী মেক্সিকো সিটি অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাজধানী মেক্সিকো সিটি থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে পুয়েবলা রাজ্যের অ্যাটেনসিঙ্গোর পাশে ভূপৃষ্ঠের ৫১ কিলোমিটার গভীরে এ ভূমিকম্পের কেন্দ্র। ভূমিকম্পের পর অনেকবার পরাঘাত (আফটার শক) হয়। এসব পরাঘাতেও অনেক ভবন ও রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৩২ বছর আগের এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষ মারা যাওয়ার দিনকে স্মরণে রেখে মঙ্গলবার রাজধানীবাসীর জন্য ভূমিকম্পে করণীয় শীর্ষক একটি মহড়া চালানো হচ্ছিল। সেই সময় ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। মানুষের মধ্যে মৃত্যু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে।
মেক্সিকো একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। চলতি মাসের প্রথম দিকে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ৮ দশমিক ১ তীব্রতার এক ভূমিকম্পে মারা যায় ৯০ জন। সেই শোক কটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারো ভূমিকম্প কেড়ে নিল ১৩৯ জনের প্রাণ।
মঙ্গলবারের এ ভূমিকম্পে মেক্সিকো সিটিতে আংশিক ভেঙে পড়া কয়েকটি স্কুলে শিক্ষার্থীরা আটকা পড়েছে। তাদের উদ্ধারে কাজ করছে প্রশাসন। শিশু শিক্ষার্থীদের মা-বাবারা তাদের সন্তানদের জীবন-মৃত্যু নিয়ে আতঙ্কিত সময় কাটাচ্ছে।
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, এ ভূমিকম্পে রাজধানীর দক্ষিণে মরেলস রাজ্যেই শুধু ৬৪ জন মারা গেছে। এ ছাড়া পুয়েবলা রাজ্যে ২৯ জন, মেক্সিকো সিটিতে ৩৬ জন, মেক্সিকো স্টেটে নয় জন এবং গুয়েরেরো রাজ্যে ১ জন মারা গেছে।
মেক্সিকো সিটির প্রায় ২০ লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। ফোন লাইন বন্ধ হয়ে গেছে। ভূমিকম্পে গ্যাস খনিতে ফাঁটল সৃষ্টি হতে পারে- এমন আশঙ্কা থেকে রাস্তায় ধূমপান না করতে রাজধানীবাসীকে সতর্ক করে দিয়েছেন কর্মকর্তারা।
মেক্সিকো সিটির মেয়র মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল ম্যানসেরা টিভি নেটওয়ার্ক টেলিভিসাকে বলেছেন, রাজধানীর ৪৪টি স্থানে গুঁড়িয়ে যাওয়া ও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে উদ্ধারাভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।