রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে অভিনব উপায়ে প্রতারণাকারী একটি চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। সোমবার (৩১ জুলাই) দিনগত রাতে এই ছয় প্রতারককে আটক করা হয়। র্যাব জানায়, এ চক্রের সদস্যরা রিকশাচালক বেশে যাত্রীদের কাছে বিদেশি নোটের গল্প ফেঁদে প্রতারণা করে থাকে।
আটককৃতরা হলো- ইনামুল শেখ (২৪), আফজাল শেখ (২৩), শহিদুল ইসলাম (৪০), লিটন মিয়া ওরফে লিটু (৪৭), জয়নাল হাওলাদার (৫৪) ও জুবায়ের মাহমুদ (৩৬)।
এ চক্রের ব্যাপারে র্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, নতুন এই চক্রের সদস্যরা কিছুদিনের জন্য কোনও একটি বস্তি এলাকায় ঘর ভাড়া নেয়। পরে ওই এলাকার আশপাশের গ্যারেজ থেকে দৈনিক চুক্তিতে রিকশাও ভাড়া নেয়। তারপর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তারা রিকশা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এসময় সহজ-সরল যাত্রী পেলে তাকে টার্গেট করে এবং বিভিন্ন গল্পের ছলে যাত্রীর বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে। এরপর ওই যাত্রীকে কৌশলে বিদেশি টাকার নোট দেখিয়ে তা ভাঙিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানায়।
বিদেশি নোট কোথায় পেয়েছে জানতে চাইলে যাত্রীকে কোন বিশ্বাসযোগ্য গল্প শোনায় তারা। ছদ্মবেশী রিকশাচালক তখন যাত্রীকে জানায়, তার পরিচিত একজনের কাছে এমন আরও অনেক নোট আছে। এসময় কোনও যাত্রী বাকি নোটগুলো দেখতে চাইলে সে তখন মোবাইল নম্বর বিনিময় করে। পরে ওই মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে যাত্রীকে চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর গামছা দিয়ে পেঁচানো বিদেশি নোটের বান্ডেল দেখায় প্রতারক চক্রটি।
সূত্র আরও জানায়, কেউ প্রলুব্ধ হলে এ চক্রের সদস্যরা প্রকৃত মূল্যের প্রায় এক চতুর্থাংশ দামে নোটের বান্ডেল দিয়ে দেওয়ার কথা বলে। এরপর প্রলুব্ধ ব্যক্তিকে ওই বান্ডেল নিয়ে দ্রুত চলে যাওয়ার তাগাদা দেয়। নয়ত অন্য কারও সঙ্গে নোটগুলো বিনিময় করার ভয় দেখায়। ফলে লোভে পড়ে অনেকেই প্রতারকের দাবিকৃত টাকায় নোটগুলো কিনে নেয়।
সূত্র জানায়, বান্ডেলের ওপরে ৪-৫টি বিদেশি নোট থাকে, ভেতরে থাকে নোট আকারে কাটা পত্রিকার পাতা। বান্ডেল গামছা দিয়ে পেঁচিয়ে এমনভাবে তৈরি করা হয়, যাতে সহজে ফাঁদের ব্যাপারটা ধরা যায় না। বান্ডেল নিয়ে যাওয়ার পর প্রলুব্ধ ব্যক্তি বুঝতে পারেন যে, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এ ব্যাপারে র্যাব-১০ এর সিও মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, এ পর্যন্ত অনেক মানুষ এ চক্রের প্রতারণার শিকার হয়েছেন। রাজধানীতে এরকম আরও অনেক চক্র সক্রিয় রয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’