ভারতের রাজস্থানে শৌচাগার না বানানোয় স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছেন এক নারী। শৌচাগার না বানানোর জন্য মাস কয়েক আগে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন ওই নারী। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) রাজস্থানের ভিলওয়ারার পারিবারিক আদালত স্বামীর এই আচরণকে 'নিষ্ঠুরতার পরিচয়' এবং 'নারীজাতির অপমান' বলে মন্তব্য করে স্ত্রীর বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনে অনুমতি দিয়েছে। এই ধরনের ঘটনায় ভারতে এই প্রথম বিবাহবিচ্ছেদ হলো। ২০১১ সালে ভিলওয়ারার বাসিন্দা এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ওই নারীর। শ্বশুরবাড়িতে ঘর অনেকগুলোই, কিন্তু একটাও শৌচাগার ছিল না। বাধ্য হয়েই তাই তৃষ্ণা উপেক্ষা করে জল কম খেতেন সদ্যবিবাহিতা, নয়তো শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। একটা একটা করে মিনিট গুনে অপেক্ষা করতেন সূর্যাস্তের। অন্ধকার নামলেই ছুটতেন মাঠের দিকে। বিয়ের পর টানা চার বছর এ ভাবেই কেটেছে তাঁর। কিন্তু আর পেরে উঠছিলেন না। পরিবারের সকলকেই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে মাঠে যেতে হত। প্রথম প্রথম পরিবারের অন্য মহিলাদের মতো তিনিও তাই করতেন। কিন্তু তা আর সহ্য হচ্ছিল না। এতে তিনি চূড়ান্ত অপমানিত বোধ করছিলেন। ফাঁকা স্থানে শৌচকর্ম করতে আত্মসম্মানে বাধছিলো তাঁর। তাই বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামীকে বাড়িতে শৌচালয় বানিয়ে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু হাজার আকুতি-মিনতি করেও কাজ হয়নি। স্বামী তাঁর কথা শোনেননি। উপরন্তু এটাই এই গ্রামের রীতি এবং এতে অপমানিত বোধ করার মতো কিছু নেই বলেও জানান। গ্রামের অন্যান্য মহিলাদের মতো তাঁকেও ফাঁকা স্থানে শৌচকর্ম করার জন্য জোর দিতে থাকেন। ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চার বছর ধরে স্বামীকে শৌচাগার তৈরির জন্য অনুরোধ করে যাচ্ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে সিদ্ধান্ত নেন বিবাহবিচ্ছেদের। ২০১৫ সালে তিনি বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন। টানা দু’বছর ধরে সেই মামলা চলে। শুক্রবার সেই মামলারই রায় হলো।
সূত্র: আনন্দবাজার