রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবুর্গে মেট্রো ট্রেনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১১ জনকে হত্যার ঘটনায় মধ্য এশীয় এক তরুণকে সন্দেহ করা হচ্ছে বলে খবর দিয়েছে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো।
ওই ঘটনার পরপরই আরেকটি স্টেশনে বিস্ফোরক পাওয়া যায়, যা পরে নিস্ক্রিয় করা হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, মেট্রো ট্রেনে বিস্ফোরণের ঘটনায় সম্ভাব্য এক তরুণকে সন্দেহ করা হলেও তিনি আত্মঘাতী হামলাকারী ছিলেন কি না- সে বিষয়ে পরস্পরবিরোধী তথ্য এসেছে।
রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, ২৩ বছর বয়সী মধ্য এশীয় যে তরুণকে এ ঘটনায় সন্দেহ করা হচ্ছে, তার সঙ্গে ইসলামী জঙ্গিবাদের যোগাযোগ আছে।
ওই তরুণ নিজেও বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন এবং তার দেহাবশেষ শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ইন্টারফ্যাক্সের প্রতিবেদনে। তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বার্তা সংস্থা তাস বলছে, ওই হামলার সঙ্গে আরও একজন নারী জড়িত থাকতে পারে বলে তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা।প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ ফেইসবুকে এক পোস্টে বিস্ফোরণের ওই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলেছেন। তবে রুশ তদন্তকারীরা খুব বেশি তথ্য প্রকাশ করেননি। কোনো পক্ষ এখন পর্যন্ত হামলার দায়ও স্বীকার করেনি।
রাশিয়ার ন্যাশনাল এন্টি টোরোরিস্ট কমিটির প্রধান বলেছেন, ট্রেনে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়েছে বোমার সাহায্যে, তবে বিস্ফোরকের ধরনটি এখনও স্পষ্ট নয়।
ওই ঘটনার পর আরেকটি স্টেশনে বোমা পাওয়া যাওয়ায় বিষয়টিকে একই হামলা পরিকল্পনার অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।
ফেইসবুক ও টুইটারে আসা প্রাথমিক ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, টেকনোলজিশেস্কি ইনস্টিটিউট স্টেশনে দাঁড়ানো ওই ট্রেনের এক বগির দরজা বিস্ফোরণে উড়ে গেছে। আশপাশে ছড়িয়ে আছে রক্তাক্ত দেহ।
সেতলানা পেত্রেংকো নামের একজন জ্যেষ্ঠ তদন্তকারী রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ট্রেনের চালক না থেমে পরের স্টেশন পর্যন্ত চালিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা চালানো গেছে, তাতে অনেকের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।
নিহতদের স্মরণে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে সেন্ট পিটার্সবুর্গ কর্তৃপক্ষ।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিস্ফোরণের ঘটনার সময় ওই শহরেই ছিলেন। সন্ধ্যায় তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং নিহতদের স্মরণে সেখানে ফুল দেন।
বিশ্বনেতারাও ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে রাশিয়ার পাশে থাকার কথা বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে একটি ‘ভয়ঙ্কর ঘটনা’ বলেছেন। আর জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল একে বর্ণনা করেছেন ‘বর্বর আচরণ’ হিসেবে।