ট্রান্সকম গ্রুপের মালিক লতিফুর রহমানের মেয়ে শাজনীন তাসনিম খুনের ঘটনায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত গৃহকর্মী শহীদুলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রোববার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস কে সাহা। গত বছরের ২ আগস্ট আপিল বিভাগ রাজধানীর গুলশানের নিজ বাড়িতে শাজনীনকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় গৃহকর্মী শহীদুল ইসলামের (শহীদ) মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। অন্য চার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
খালাস পাওয়া চারজন হলেন- বাড়ির সংস্কারকাজের দায়িত্ব পালনকারী ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসান ও তার সহকারী বাদল, বাড়ির গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন (মিনু) ও পারভীন।
পরে শহীদুল আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানে নিজ বাড়িতে খুন হন লতিফুর রহমানের মেয়ে স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র শাজনীন তাসনিম রহমান। এ ঘটনায় শাজনীনের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়।
২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী রহমতউল্লাহ শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে তাদের বাড়ির সংস্কার কাজের দায়িত্ব পালনকারী ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসানসহ ছয়জনকে ফাঁসির আদেশ দেন।
ফাঁসির আদেশ পাওয়া অন্য পাঁচ আসামি হলেন- গৃহকর্মী শহীদুল ইসলাম শহীদ, হাসানের সহকারী বাদল এবং গৃহকর্মী দুই বোন এস্তেমা খাতুন মিনু ও পারভীন এবং কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডল।
পরে এ মামলার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য হাইকোর্টে যায়। ২০০৬ সালের ১০ জুলাই হাইকোর্ট পাঁচ আসামি হাসান, শহীদ, বাদল, মিনু ও পারভীনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। তবে ফাঁসির আদেশ পাওয়া শনিরামকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন ফাঁসির আদেশ পাওয়া চার আসামি মইনুদ্দিন হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন।
২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল সাজাপ্রাপ্ত চার আসামির লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। ফাঁসির আদেশ পাওয়া আরেক আসামি শহীদুল জেল আপিল করেন। প্রায় সাত বছর পর গত বছরের ২৯ মার্চ ওই পাঁচ আসামির আপিলের শুনানি শুরু হয়ে ১১ মে শেষ হয়। পরে ২ আগস্ট রায় দেন আপিল বিভাগ।