সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাটের শহীদ সিরাজ লেকে নিখোঁজের দুদিন পর আজ সোমবার সকালে পর্যটক ওয়াহিদ পলিনের (২৮) লাশ ভেসে ওঠে। পরে তাহিরপুর থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
নিহত ওয়াহিদ পলিন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার লাজুড় গ্রামের বাসিন্দা মো. মোস্তফা কামালের একমাত্র ছেলে। তাঁরা বর্তমানে ঢাকার মিরপুরে বসবাস করছেন। ওয়াহিদ পলিন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গত শুক্রবার ঢাকা থেকে পাঁচ বন্ধু সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে আসেন। রাতে হাওরে থেকে শনিবার দুপুরে তাঁরা ভারত সীমান্তবর্তী টেকেরঘাটের শহীদ সিরাজ লেকে (অনেক পর্যটকের কাছে নিলাদ্রী লেক নামে পরিচিত) গোসল করতে নামেন। একপর্যায়ে ওয়াহিদ পলিন পানিতে ডুবে যান। তখন বেশ কয়েকজন পর্যটক তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করলেও লেক অনেক গভীর থাকায় পারেননি।
ওয়াহিদ পলিনরা পাঁচ বন্ধু গিয়েছিল। ওরা ভারত সীমান্তের পাশ দিয়ে নীলাদ্রি লেকে গোসল করতে নামে। বিপজ্জনক হওয়ায় ওই পাশ দিয়ে স্থানীয় লোকজনও নামে না। আমাদের চার গ্রুপ মিলে ওই দিন দেড় শতাধিক ট্রাভেলার সেখানে যায়। ওয়াহিদ পলিন ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমিই প্রথম ঝাঁপ দিয়েছি। কিন্তু ডুবে যাওয়ার স্থানটি অনেক গভীর ছিল। পানির চাপও প্রচুর ছিল। কয়েকটা ডুব দিয়ে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়ি। কিছুই করার ছিল না আর।
প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী জানান, নিখোঁজের পর থেকে স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল লেকে অভিযান চালায়। কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হয়। এরপর আজ সকাল ১০টার দিকে লাশটি ভেসে উঠলে পুলিশ পলিনের লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
টাঙ্গুয়ার হাওরে কর্তব্যরত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম মো. শাকিল আহমদ জানান, বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় উদ্ধার অভিযানে সমস্যা হচ্ছিল। পরে আজ সকাল ১০টার দিকে লাশটি ভেসে উঠলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে। নিহতের পরিবারের লোকজনও ঘটনাস্থলে ছিলেন। পরিবারের লোকজন ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিয়ে যাবেন। বর্তমানে লাশটি তাহিরপুর থানায় নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নন্দন কুমার ধর জানান, স্বজনরা বর্তমানে তাদের সঙ্গে অবস্থান করছেন। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ছবি : সংগৃহীত