আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় একজনের হাতে ধারালো অস্ত্র দেখা যায়। ছবিটি শনিবার বিকেলে হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ এলাকা থেকে তোলা। চট্টগ্রাম নগরের হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের মধ্যে আজ শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হন।
ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় কলেজের পাশে থাকা বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে তাদের হুড়োহুড়ি করে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে ছুটতে দেখা যায়। এই সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের দোকানগুলোও বন্ধ করে দেন দোকানিরা। বেলা তিনটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের পাশে হাজী মুহাম্মদ মহসিন উচ্চবিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম উচ্চবিদ্যালয় এবং বিপরীতে পাশে চট্টগ্রাম কলেজ ও কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ অবস্থিত।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল হুদা বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ছাত্রলীগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, আজ দুপুর ১২টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর আ জ ম নাছিরের অনুসারীরা ক্যাম্পাস থেকে মিছিল বের করে পাশের এলাকা চকবাজারে যান। ওখান থেকে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাইলে বাধা দেন মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে দুই পক্ষকে দুই পাশে সরিয়ে দেয়। এ সময় মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীরা চকবাজারের দেব পাহাড় এলাকায় এবং নাছিরের অনুসারীরা গণি বেকারি এলাকায় অবস্থান নেন।
বেলা আড়াইটার দিকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীরা গণি বেকারির দিকে যেতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় দুই পক্ষ পরস্পরের দিকে পাথর ছুড়তে থাকে। এতে অন্তত আটজন আহত হন। সংঘর্ষের সময় কয়েকজনকে ধারালো হাতে দেখা যায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীরা হলেন গণিতের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মায়মুন উদ্দিন, স্নাতক (পাস) তৃতীয় বর্ষের আনোয়ার পলাশ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মো. জিশান, অর্থনীতি প্রথম বর্ষের হানিফ সুমন ও ইংরেজি প্রথম বর্ষের ছিদ্দিক সোহান। তাঁরা নগরের মেহেদীবাগ এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া আ জ ম নাছিরের অনুসারীদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম, আকমাম বাপ্পী ও মো. হাসান আহত হন। তাঁরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।
তবে বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাছিরের অনুসারী এনাম হোসেন চৌধুরী। তিনি অভিযোগ করেন, মহিউদ্দিনের অনুসারীরাই একবার কলেজ ক্যাম্পাসে এবং পরে গণি বেকারি এলাকায় তাঁদের ওপর হামলা করেছেন। এই ঘটনায় মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
গত ১১ ও ১২ জুলাই চট্টগ্রাম কলেজে আ জ ম নাছির অনুসারীদের মধ্যে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। ওই সময় এক যুবককে অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষকে ধাওয়া করতে দেখা যায়।
