শক্তিশালী হারিকেন ইরমার আঘাতে তছনছ হয়ে গেছে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ।
ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অনেক দ্বীপ। এরই মধ্যে মারা গেছে কমপক্ষে সাতজন। আহত হয়েছে বহু মানুষ।
অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টন ব্রাউনের বরাত দিয়ে এবিসি নিউজের অনলাইনে জানানো হয়েছে, হারিকেন ইরমার আঘাতে বারবুডা দ্বীপের ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ও যানবাহন ধ্বংস হয়েছে।
আর নিউ ইয়র্ক ডেইলি জানিয়েছে, আক্ষরিক অর্থে বারবুডা এখন পানির নিচে। অন্যদিকে, বিবিসি অনলাইন জানিয়েছে, বারবুডা দ্বীপ মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
বুধবার ক্যাটাগরি ৫ মাত্রার হারিকেন ইরমা ২৯৫ কিলোমিটার (১৮৫ মাইল) বেগে বারবুডায় আঘাত হানে।
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ফ্রান্সের মালিকানাধীন সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অধিকাংশ এলাকাই ধ্বংস হয়ে গেছে। এ দ্বীপের বিমানবন্দর প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ফ্রান্স জানিয়েছে, সেন্ট বার্টস দ্বীপেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, যে ব্যাপক মাত্রায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাতে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, হারিকেন ইরমার আঘাত শেষ হতে না হতেই আবার দুঃসংবাদ এসেছে। আটলান্টিকে উৎপন্ন দুটি শক্তিশালী ঝড় হারিকেনে পরিণত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, পুয়ের্তো রিকো দ্বীপের উত্তরাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ইরমা। এটি ৫ ক্যাটাগারির হারিকেন, যা হারিকেনের সর্বোচ্চ মাত্রা।
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের অধিকাংশ দ্বীপে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পানীয় জলের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিদ্যু ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা সচল হতে বেশ কয়েক দিন লেগে যাবে।
আটলান্টিক সাগরে উৎপত্তি হওয়া হারিকেন ইরমা গত এক দশকের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়। ঘণ্টায় ২৯৫ কিলোমিটার গতিতে প্রবাহিত হচ্ছে ইরমা। বৃহস্পতিবার এটি ডোমিনিকান রিপাবলিকের পাশ দিয়ে অথবা উত্তরাঞ্চল দিয়ে বয়ে যেতে পারে।
বারবুডা দ্বীপে জনসংখ্যা মাত্র ১ হাজার ৬০০ জন। আর অ্যান্টিগুয়ার জনসংখ্যা ৮০ হাজার। বারবুডায় ইরমার আঘাতে একজন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাউন।
ফ্রান্সের সেন্ট মার্টিন ও সেন্ট বার্টস দ্বীপে কমপক্ষে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। ফরাসিদের কাছে জনপ্রিয় পর্যটন স্থান এই দ্বীপ দুটি। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, দ্বীপ দুটির অধিকাংশ অবকাঠামো ভূমিসাৎ হয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ও তার সহযোগীরা ইরমার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেছেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে, এটি এমন কিছু হতে পারে, যা মোটেও নয়। বিশ্বাস করুন, মোটেও ভালো নয়।’|
যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ঘটাতে পারে হারিকেন ইরমা, তা এখনো বুঝে উঠতে না পারলেও মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, রোববার নাগাদ ফ্লোরিডা রাজ্যে আঘাত হানতে পারে এটি। তবে ইরমার মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগেভাগে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে রেখেছেন।