গণভবনে শিশুদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে ২০১৭ সালের বই উৎসবের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুন শিক্ষাবর্ষের জন্য বিনামূল্যে বই বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে খুব আনন্দের দিন। নতুন বই মানে আলাদা আনন্দ।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে প্রাক প্রাথমিক থেকে শুরু করে প্রাথমিক, ইবতেদায়ি, মাধ্যমিক, দাখিল, কারিগরি, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে থাকা নিজের দুই নাতনির হাতেও নতুন বই তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। তার দুই নাতনি নতুন বইয়ের জন্য সকাল থেকে বসে আছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
রোববার (০১ জানুয়ারি) থেকে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ করা হবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
এ বছর ৪ কোটি ২৬ লাখ ৩৫ হাজার ৯২৯ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫ খানা বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন ক্লাসে নতুন বই, এটি পড়াশোনার আগ্রহ বাড়ায়। তাছাড়া অনেক বাবা-মায়ের বই কেনার পয়সা থাকে না। এজন্য আমরা বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দিচ্ছি।
২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২২৫ কোটি ৪৩ লাখ বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনামূল্যে এতো বিপুল সংখ্যক বই বিতরণ বিশাল ব্যাপার। আমরা এটি সফলতার সঙ্গে করেছি। এমনকি ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবের আন্দোলনের মধ্যেও সঠিক সময়ে বই পৌঁছে দিয়েছি।
মানসম্পন্ন লেখাপড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পড়াশোনার মান উন্নত করছি। যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারে।
পড়াশোনার মান নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন তাদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, একদিনে সব হয় না। তাছাড়া মানের মাত্রা কী? যারা সমালোচনা করে তারা বলতে পারেন মাত্রা কী? একই সঙ্গে শুধু সমালোচনা না করে কোন কোন এলাকায় মান অর্জন হচ্ছে না সেখানে সহযোগিতা করতে পারেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের জনকল্যানমূলক বিভিন্ন কাজের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অবৈধ ক্ষমতার দখলের পালা শুরু হয়। ২১ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না। আমরা আসায় মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে সরকার জনগণের সেবক।
প্রধানমন্ত্রী শিক্ষায় সরকারের বিভিন্ন অর্জন ও পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
বক্তব্যে তিনি সবাইকে গ্রেগরি (গ্রেগরিয় বর্ষপঞ্জী) নতুন বছরের শুভেচ্ছাও জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার প্রধানমন্ত্রীকে আলাদাভাবে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন।
এ সময় নাহিদ প্রধানমন্ত্রীর হাতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ব্রেইল বই এবং ৫টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষার বই এবং মোস্তাফিজুর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি সংবলিত একটি অ্যালবাম তুলে দেন।
গণভবনে সংশ্লিষ্ট সচিবসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।