জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে দেশের অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কোস্টগার্ডকেও কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘উপকূলীয় এলাকায় কো্স্ট গার্ড আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। মানবপাচার, চোরাচালান রোধসহ কোস্ট গার্ড নানা কাজ করছে। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি কোস্ট গার্ডকেও কাজ করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কোস্ট গার্ডকে সিজিএস তাজউদ্দীন আহমদ ও সিজিএস সৈয়দ নজরুল ইসলাম নামের দুটি জাহাজ কমিশনকালে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘দেশ আজ অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা কোস্ট গার্ডকে চারটি জাহাজ দেওয়ার কথা বলেছিলাম। এগুলো ইতালি থেকে আনা হচ্ছে। এর মধ্যে আজ সিজিএস তাজউদ্দীন আহমদ ও সিজিএস সৈয়দ নজরুল ইসলাম জাহাজ দুটি কমিশন করলাম। এ বছরই অন্য দুটি জাহাজ- সিজিএস মনছুর আলী ও সিজিএস কামরুজ্জামান কমিশন করা হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকায় কোস্ট গার্ড চালুর পর গত আট বছরে সংস্থাটি ৩০টি সাইক্লোন সেন্টার স্থাপন করেছে। কোস্ট গার্ডে আধুনিক যান সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত নারায়ণগঞ্জ শিপইয়ার্ড ও খুলনা শিপইয়ার্ডে নুতন যান তৈরি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘কোস্ট গার্ডের সুনাম আজ আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। বিগত বছরগুলোতে দেশের সমুদ্রবন্দর ও বহির্নোঙ্গর এলাকায় বাণিজ্যিক জাহাজের অব্যাহত নিরাপত্তা প্রদানে কোস্টগার্ডের কর্মতৎপরতা বহির্বিশ্বে সমাদৃত। এই কারণেই চট্টগ্রাম বন্দর আন্তজার্তিক মেরিটাইম ব্যুরোর বিবেচনায় নিরাপদ বন্দর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যথাযথভাবে সমুদ্র বণ্টন হওয়ায় আমরা বিশাল সমুদ্র পেয়েছি। সমুদ্র পথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসহ বঙ্গোপসাগরের বিপুল সম্পদ রক্ষায় আমাদের কাজ করতে হবে। এ জন্য কোস্ট গার্ডকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
জাটকা নিধন রোধে কোস্ট গার্ডের ভূমিকার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাটকা নিধন রোধে কোস্ট গার্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখছে।’
কোস্টগার্ডের সীমাবদ্ধতা কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোস্ট গার্ডের সীমাবদ্ধতার কথা আমার জানা আছে। এজন্য লোকবল নিয়োগ ও জলযান সরবরাহের বিষয়টি আমার মাথায় আছে।’
কোস্টগার্ডের সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের সেবায় আপনারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মানুষের সেবায় আপনারা আরো কাজ করে যাবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
কোস্ট গার্ডের জাহাজ দুটি তৈরি করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতালির সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান। দুদেশের মধ্যে এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।