বিশ্বের সবচেয়ে ধনাঢ্য তেল কোম্পানি এক্সন মোবিলের সাবেক চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রেক্স টিলারসন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। টিলারসন, যিনি ব্যবসায়ী হিসেবে আগে থেকেই বিশ্বে বহুল পরিচিত।
‘রাশিয়ার বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত সেই টিলারসনেই আস্থা রাখলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটও তাকে অনুমোদন দিল। রাজনীতির র-ও যিনি জানেন না, সেই টিলারসন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত হলেন।
কখনো কোনো রাজনৈতিক পদে দায়িত্ব পালন করেননি বিশ্বের অন্যতম ধনী টিলারসন। তা ছাড়া, রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এসব বিষয়ে সিনেটের কড়া প্রশ্নের মোকাবিলা করতে হয়েছে তাকে।
শপথ গ্রহণের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার সারা জীবন এই মুহূর্তটির জন্য আপনাকে প্রস্তুত করেছে।’ প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে টিলারসন বলেন, ‘আমি যেহেতু এই প্রেসিডেন্টের কাজ করব, যেহেতু সব সময়ই আমি আমেরিকার জনগণের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করব।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি রসনেফটের সঙ্গে এক্সন মবিলের এই প্রাক্তন প্রধান কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেন এবং ২০১৩ সালে রাশিয়া তাকে অর্ডার অব ফ্রেন্ডশিপ পুরস্কারে ভূষিত করে।
সিনেটে নিয়োগসংক্রান্ত শুনানিতে টিলারসন স্বীকার করেছেন, রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ রয়েছে। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনার বিষয়ে একমত নন তিনি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ও পরিকল্পনা বিশ্বজুড়ে বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব পড়ল টিলারসনের ঘাড়ে। চীন ও রাশিয়ার মতো বৈরী দেশের সঙ্গে কাজ করতে হবে এবং অন্যান্য দেশে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায় নিয়োজিত থাকতে হবে তাকে। জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে বাকি বিশ্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে।
সিনেটে দলীয় ভোটে অনুমোদন পেয়েছেন টিলারসন। তবে কিছুসংখ্যক রিপাবলিকান সিনেটর তাকে মনোনয়ন দেবেন না বলে জানা গিয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত হয়নি।
অনেক সমালোচক দাবি করে আসছেন, করপোরেট স্বার্থ ত্যাগ করতে পারবেন না টিলারসন। তবে তার সমর্থকদের দাবি, বৈশ্বিকভাবে ব্যবসায় সফল এই ব্যক্তি তার অভিজ্ঞতা কূটনৈতিক পদে কাজে লাগাতে পারবেন।